ব্রাজিলে সুপারমডেল গিসেলে বন্দচেনের ডিপফেক ব্যবহার করে কোটি টাকার প্রতারণা চালিয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। ইনস্টাগ্রাম বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ভুয়া পণ্য ও সেবার প্রচার করে তারা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রায় ২০ মিলিয়ন রেইস (প্রায় ৩.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) হাতিয়ে নেয়। দেশটির পুলিশ জানায়, সম্প্রতি অভিযানে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পাঁচটি রাজ্যে সন্দেহভাজনদের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, প্রতারকরা বন্দচেনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক তারকার কৃত্রিম ভিডিও ব্যবহার করতো। এসব ভিডিওতে তারকারা স্কিনকেয়ার পণ্য, বিনিয়োগ প্রকল্প কিংবা ভুয়া গিভঅ্যাওয়ে অফার প্রচার করছে— এমনভাবে উপস্থাপন করা হতো। ভুক্তভোগীদের অনেকে অল্প অঙ্কের অর্থ, সাধারণত ১০০ রেইস (প্রায় ১৯ ডলার) বা তার কম ক্ষতি করায় অভিযোগ জানাতেন না। এর সুযোগে চক্রটি নিরাপদ মনে করে প্রতারণার জাল আরও বিস্তার করে।
২০২৪ সালের আগস্টে এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তিনি জানান, গিসেলে বন্দচেনের পরিবর্তিত ভিডিও ব্যবহার করে তাকে স্কিনকেয়ার পণ্য কেনার প্রলোভন দেখানো হয়েছিল। আরেক বিজ্ঞাপনে ডিপফেক ব্যবহার করে গিভঅ্যাওয়ে অফার প্রচার করা হয়, যেখানে মানুষকে শিপিং ফি দিতে বলা হলেও কোনো পণ্য সরবরাহ করা হয়নি।
সাইবারক্রাইম ইউনিট বলছে, চক্রটি কেবল স্কিনকেয়ার পণ্য নয়, ভুয়া বেটিং প্ল্যাটফর্ম এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক প্রকল্পেও ডিপফেক ব্যবহার করেছে। এ ধরনের প্রতারণা শনাক্ত ও প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে।
এ বছরের জুনে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন দ্রুত অপসারণ না করলে তারাও আইনি দায় বহন করবে।
ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা জানিয়েছে, জনপরিচিত ব্যক্তিদের ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করে প্রতারণা চালানো তাদের নীতির পরিপন্থী। প্রতিষ্ঠানটি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব বিজ্ঞাপন শনাক্ত করে দ্রুত অপসারণ করছে।
গিসেলে বন্দচেনের টিম সাধারণ ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে বলেছে, কোনো বিজ্ঞাপনে অস্বাভাবিক ছাড় বা অতি-আকর্ষণীয় অফার দেখলে তা যাচাই করতে হবে। একই সঙ্গে সন্দেহজনক বিজ্ঞাপন সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স, গ্লোবো নিউজ
সিএ/এমআর