বিশ্বখ্যাত ইসলামিক স্কলার মুফতি ইসমাইল মেনক তার নাম, মুখ ও কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিনির্ভর ভুয়া ভিডিও ও অডিও ছড়ানোর বিষয়ে সতর্ক করেছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তাকে রাজনৈতিক ও বিতর্কিত বিষয়ে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে— অথচ বাস্তবে তিনি এসব বিষয়ে কখনোই কথা বলেননি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মুফতি মেনক বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমার মুখ, কণ্ঠ ও নাম বিকৃতভাবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক বিষয়ভিত্তিক ভুয়া কনটেন্ট ছড়ানো হচ্ছে। আমি স্পষ্ট জানাতে চাই, এসব কনটেন্টের কোনোটি আমার নয়। আমার ভেরিফায়েড সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে প্রকাশিত কিছুই আমি স্বীকৃতি দিই না।”
তিনি তার অনুসারীদের উদ্দেশে আহ্বান জানান, “যে কোনো সন্দেহজনক ভিডিও বা অডিও দেখলে আগে যাচাই করুন। আমার ভেরিফায়েড সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত হয়েছে কিনা তা দেখে নিন, তারপরই বিশ্বাস বা শেয়ার করুন।”
মুফতি মেনক আরও বলেন, “এই ধরনের ভুয়া বা এআই-নির্ভর কনটেন্টের জন্য আমি কোনোভাবেই দায়ী নই। বরং সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিপফেক প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন এমন ভিডিও বা অডিও তৈরি করা সম্ভব যেখানে জনপরিচিত ব্যক্তিদের এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যেন তারা এমন কিছু বলছেন বা করছেন যা আসলে কখনো ঘটেনি। ধর্মীয় নেতারা সমাজে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের পরিচয় ব্যবহার করে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর বার্তা ছড়ানোর ঝুঁকি অনেক বেশি।
মুফতি মেনকের এই সতর্কবার্তা এমন এক সময় এসেছে, যখন বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজন তৈরির হাতিয়ার হিসেবে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে।
প্রসঙ্গত, ড. মুফতি ইসমাইল মেনক বর্তমান সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী ইসলামী ব্যক্তিত্ব। জিম্বাবুয়েতে জন্মগ্রহণকারী এই আলেম মদিনায় ইসলামী শিক্ষা অর্জন করেন এবং অ্যালডারগেটস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামাজিক নির্দেশনা বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১০ সাল থেকে তিনি বিশ্বের সর্বাধিক প্রভাবশালী ৫০০ মুসলিমের তালিকায় রয়েছেন।
তার গভীর জ্ঞান, সহজ উপস্থাপনা, রসিকতা ও বাস্তবধর্মী পরামর্শের জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার অবস্থান সর্বজনবিদিত।
সিএ/এমআর