অনিয়মিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর একটি হলো হৃদরোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত ফ্যাট ও কোলেস্টেরল ধমনিতে বাধা সৃষ্টি করে, ফলে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং স্থূলতাও এই ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
বিশেষ করে অতিরিক্ত লবণ, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। পুষ্টিবিদরা ৯টি খাবারের তালিকা দিয়েছেন, যা নিয়মিত গ্রহণ করলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
১. কোমল পানীয়
পেট ভরে খাওয়ার পর অনেকেই কোমল পানীয় পান করেন। প্রতি ১২ আউন্স সোডাজাতীয় পানীয়তে থাকে প্রায় ১০ চা চামচ চিনি। নিয়মিত এসব পানীয় ওজন বাড়ানোর পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। কৃত্রিম চিনির ব্যবহারের সঙ্গে ক্যানসারেরও সম্পর্ক দেখা গেছে।
২. সাদা ব্রেড ও লবণ
সাদা ব্রেডে উচ্চ কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা খেলে হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি বাড়ে। উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রক্তে চিনি দ্রুত বৃদ্ধি করে, যা হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক কারণগুলোর একটি। অতিরিক্ত লবণ রক্তনালির ক্ষতি করে এবং ব্লক তৈরি করতে পারে। দিনে ৫ গ্রাম থেকে বেশি লবণ গ্রহণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
৩. প্রক্রিয়াজাত মাংস
সসেজ, হট ডগসহ প্রক্রিয়াজাত মাংসে থাকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও লবণ। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত প্রক্রিয়াজাত মাংস খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।
৪. ফাস্টফুড
চিনি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং প্রচুর ক্যালোরি—সবই ফাস্টফুডে থাকে। এগুলো হার্ট অ্যাটাকজনিত মৃত্যুর অন্যতম কারণ।
৫. পিৎজা
পিৎজায় থাকে ফ্যাট, লবণ এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস। স্যাচুরেটেড ফ্যাটের মাত্রা বেশি হওয়ায় এটি হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।
৬. আইসক্রিম
পরিশোধিত চিনি, ফ্যাটযুক্ত দুধ এবং কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ আইসক্রিম ক্যালরির মাত্রা বাড়িয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তৈরি করে।
৭. কলিজা, মগজ, হাড়ের মজ্জা
কলিজা, মগজ ও হাড়ের মজ্জায় বেশি পরিমাণ কোলেস্টেরল থাকে। তাই যারা হৃদরোগে আক্রান্ত তাদের এই ধরনের খাবার বর্জন করা উচিত।
৮. মাছের মাথা ও ডিম
মাছের মাথা বা মাছের ডিম রক্তের লিপিড প্রোফাইল বাড়ায়। এতে এলডিএল বা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়।
৯. চিংড়ি
হৃদরোগীদের জন্য চিংড়িও বর্জনীয়। যদিও ক্যালরি কম, কিন্তু এতে প্রচুর কোলেস্টেরল থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ৩.৫ আউন্স রান্না করা স্যামন মাছের কোলেস্টেরল মাত্র ৬২ মিলিগ্রাম, যেখানে একই পরিমাণ চিংড়িতে ১৮৯ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে।
শেষ কথা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার এবং শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখা সম্ভব। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা হলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো যায়।
সূত্র : হার্ভার্ড হেল্থ, কোয়ান্টাম মেথড ও ওয়েবএমডি
সিএ/জেএইচ


