শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) কানের একটি জটিল রোগ অটোস্কলেরোসিস সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই রোগে মধ্যকর্ণের ভেতরে থাকা সবচেয়ে ছোট তিনটি হাড়—ম্যালিয়াস, ইনকাস ও স্টেপিস—ধীরে ধীরে গঠনগত পরিবর্তনের শিকার হয়। বিশেষ করে স্টেপিস হাড়ের ফুট প্লেট অংশে পরিবর্তন শুরু হলে শব্দ পরিবহনে বাধা সৃষ্টি হয়।
চিকিৎসকদের মতে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শুধু স্টেপিসের ফুট প্লেট বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনটি হাড়ের সব কটিরই গঠনে পরিবর্তন দেখা যায়। এর ফলে শব্দ স্বাভাবিকভাবে কানের ভেতর প্রবেশ করতে পারে না। ধীরে ধীরে রোগীর শ্রবণশক্তি কমতে থাকে। একই সঙ্গে টিনিটাস বা কানে শোঁ শোঁ শব্দ, মাথা ঘোরানো, বমি বমি ভাব কিংবা বমির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
অটোস্কলেরোসিস পুরোপুরি সারিয়ে তোলার চিকিৎসা এখনো নেই। তবে ওষুধের মাধ্যমে রোগটির অগ্রগতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হয়। চিকিৎসকেরা জানান, কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যবহার করে রোগটি যাতে আর না বাড়ে বা এক কান থেকে অন্য কানে ছড়িয়ে না পড়ে, সে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। তবে এ চিকিৎসায় নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফলোআপ প্রয়োজন হয়, যা সময় ও ব্যয়ের দিক থেকে অনেকের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
বর্তমানে দেশে অটোস্কলেরোসিসের জন্য সার্জারি বা স্টেপেডেকটমি করা হচ্ছে। এই অস্ত্রোপচারে আক্রান্ত হাড়টি অপসারণ করে তার জায়গায় গ্রাফট বা কৃত্রিম প্রোস্থেটিক বসানো হয়। এতে একদিকে রোগাক্রান্ত অংশ শরীর থেকে সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয়, অন্যদিকে শ্রবণশক্তি কিছুটা হলেও ফিরিয়ে আনা যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যকর্ণের যেকোনো সমস্যাকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া ধীরে ধীরে ঘটে বলে অনেক সময় রোগী নিজেই তা বুঝতে পারেন না। স্বাভাবিক কথাবার্তা বিরক্তিকর মনে হওয়া, বারবার একই কথা শুনতে চাওয়া, ইলেকট্রনিক ডিভাইসে শব্দসংক্রান্ত সতর্কবার্তা আসা, টিনিটাস বা মাথা ঘোরানোর সমস্যা বাড়তে থাকলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।
সিএ/বিই


