বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের অমর নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর রহস্য এখনও অব্যাহত। প্রায় ২৯ বছর পেরিয়ে গেলেও ঘটনাটি ঘিরে বিতর্ক ও নতুন তদন্ত চলছে। সর্বশেষ আদালতের নির্দেশে তার অপমৃত্যু মামলাটি ‘হত্যা মামলা’ হিসেবে পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে।
সালমান শাহ হত্যা মামলার দুই আলোচিত আসামি—সালমানের সাবেক স্ত্রী সামিরা হক এবং বাংলা চলচ্চিত্রের খলনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল হক ডন—দেশেই রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। তবে তাদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, “এজাহারে যাদের নাম আছে, তাদের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। শনাক্ত করতে পারলে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।”
আদালত ইতোমধ্যে আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অন্যদিকে সামিরার স্বামী সম্প্রতি তার আগাম জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন।
গত ২৯ বছরে সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করেছে চারটি আলাদা সংস্থা, যাদের প্রত্যেকেই তা ‘আত্মহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তবে ২১ অক্টোবর আদালতের নির্দেশে রমনা থানায় নতুন করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় সামিরা, ডন, বিতর্কিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সালমান শাহর মরদেহে রক্তের দাগ থাকার দাবি করেছিলেন তার মা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ সহকারী মোহাম্মদ সেকেন্দার বলেন, “মৃত্যুর আগে রক্ত থাকলে ছবি তোলা হতো এবং প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যেত। তবে ময়নাতদন্তের পর রক্ত লাগলে সেটা আলাদা বিষয়।”
১৯৯৭ সালে মামলার ১১ নম্বর আসামি রেজভি আহমেদ ফরহাদের জবানবন্দি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। তিনি দাবি করেছেন, “সালমান শাহকে হত্যা করে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজানো হয়েছিল” এবং নিজের জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলার সকল দিক পর্যালোচনা করে নতুন করে তদন্ত এগিয়ে চলছে। সালমান শাহর মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে এবার কতটা অগ্রগতি হবে, তা দেখার জন্য দেশজুড়ে ভক্তরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
সিএ/এমআর


 
                                    
