ফ্যাসিবাদী অপশক্তির অনুসরণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ–বিপক্ষ ট্যাগ লাগানোর অশুভ রাজনীতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ১০১ জন শিক্ষক।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ১০১ শিক্ষকের স্বাক্ষর সংবলিত একটি বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসের পরিবর্তে ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দলের নামে যে প্রচার চালানো হচ্ছে, তা মূলত ইতিহাস বিকৃতিরই নামান্তর। অতীতে ফ্যাসিবাদী একাধিপত্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত বিবরণ আড়াল করা হয়েছে। বর্তমানেও সেই ফ্যাসিবাদী অপশক্তির অনুসরণ করে কোনো কোনো গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ–বিপক্ষ ট্যাগ লাগিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশে দেশপ্রেমিক জনতা এই বিভাজনমূলক রাজনৈতিক কূটচাল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে। ফ্যাসিবাদী অপশক্তির অনুসরণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ–বিপক্ষ ট্যাগ লাগানোর এই অশুভ রাজনীতির বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এছাড়া বিবৃতিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় চবি উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের বক্তব্যের কিছু অংশ খণ্ডিতভাবে প্রচার করে একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করা হয়। যদিও এ বিষয়ে চবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিদাতারা মনে করেন, তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডকে অবমাননা করে এমন কোনো বক্তব্য দেননি; বরং হত্যার প্রকৃতি ও পরিকল্পনা নিয়ে আরও প্রামাণ্য গবেষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, বিজয়ের প্রাক্কালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ ও নেপথ্যের হত্যাকারী চক্র চিহ্নিত করতে একটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত প্রয়োজন। একইসঙ্গে বলা হয়, যারা সত্যনির্ভর ইতিহাসচর্চার পরিবর্তে স্বাধীনতার পক্ষ–বিপক্ষ স্লোগান তুলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, তারা বিভাজন সৃষ্টিকারী শক্তির সহযোগী।
শেষে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, দেশপ্রেমিক ছাত্র–জনতা এসব দেশবিরোধী, গণতন্ত্রবিরোধী ও বিভাজন সৃষ্টিকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
মোতাহের উদ্দিন
চবি প্রতিনিধি
সিএ/জেএইচ


