আন্দোলনের চাপ না থাকলে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পাওয়া কঠিন হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁর ভাই ওমর বিন হাদি। তিনি বলেছেন, বিচার আদায় এবং ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে হলে জনগণকে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে ওসমান বিন হাদির শাহাদাত উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন ওমর বিন হাদি। তিনি বলেন, ওসমান হাদিকে যারা ভালোবাসেন, তাঁর হত্যার বিচার চান এবং শাহবাগকে ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদমুক্ত দেখতে চান, তাঁদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে।
ঢাকা–৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে প্রচার চালাচ্ছিলেন ওসমান হাদি। ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে আওয়ামী লীগ ও ভারতের বিরুদ্ধে সরব অবস্থানের মধ্যেই ১২ ডিসেম্বর তাঁর ওপর হামলা হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলেও ছয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বৃহস্পতিবার সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
গতকাল শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় শোকের মধ্য দিয়ে সারা দেশে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণের পর ওসমান হাদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে সমাহিত করা হয়।
দোয়া মাহফিলে ওমর বিন হাদি বলেন, তাঁরা কোনো আর্থিক সহায়তা বা অনুদান চান না। তিনি বলেন, একটাই দাবি—ওসমান হাদির অসমাপ্ত বিপ্লব জনগণকে সমাপ্ত করতে হবে। ইনসাফের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ওসমান হাদি যে বিপ্লবী আন্দোলন শুরু করেছিলেন এবং যার কারণে তিনি শহীদ হয়েছেন, সেই আন্দোলনের দায় এখন দেশের মানুষের ওপর বর্তেছে।
ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের জন্য তাঁর সমর্থকেরা ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে দায়ী করছেন। ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ফয়সাল করিম মাসুদকে।
পুলিশ ও র্যাব এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করলেও প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদসহ কয়েকজন এখনো পলাতক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, তাঁরা ভারতে পালিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করছেন ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীরা।
ওমর বিন হাদি বলেন, ওসমান হাদির মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার এবং ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যরা এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি।
সিএ/জেএইচ


