Wednesday, December 10, 2025
21 C
Dhaka

১৬ বছর বাংলাদেশ যেন কালো মেঘের নিচে চাপা পড়ে ছিল : তারেক রহমান

বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, মিথ্যা মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘১৬টা বছর ধরে বাংলাদেশ যেন একটা কালো মেঘের নিচে চাপা পড়ে ছিল। কেউ সেই অন্ধকারকে খুব তীব্রভাবে টের পেয়েছে, কেউ চুপচাপ বয়ে বেড়িয়েছে। কিন্তু যাদের রাজনৈতিক অবস্থান তখনকার পতিত সরকারের বিপরীতে ছিল, তাদের জন্য এই অন্ধকার ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। রাতের বেলা দরজায় কড়া নাড়া, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, ভয়কে সংস্কৃতি বানিয়ে ফেলা, আর অসংখ্য পরিবার অপেক্ষা করেছে সেই প্রিয়জনদের জন্য, যারা আর কোনোদিন ঘরে ফিরে আসেনি।এই বোঝা বিএনপির চেয়ে বেশি আর কেউ বহন করেনি। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, হেফাজতে মৃত্যু, মিথ্যা মামলা— সব জায়গায় বিএনপির নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানেও সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে বিএনপির ঘরেই।’

বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে তিনি এসব কথা জানান। তিনি বলেন, ‘কিন্তু অত্যাচারের শিকার শুধু বিএনপি ছিল না; ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক, পথচারী, সাধারণ মানুষ— সবাই সেই ভয়ংকর পরিবেশের ক্ষত বয়ে বেড়িয়েছে, ন্যূনতম মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত মর্যাদা, নিরাপত্তা, মত প্রকাশের অধিকার এর মত মৌলিক সব বিষয়গুলো ছিল হুমকির মুখে।’

তারেক রহমান লিখেছেন, ‘এই বছরগুলোতে আমাকেও কথা বলার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। ২০১৫ সাল থেকে আমার কথা বলার অধিকার সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নেওয়া হয়। দেশের কোনো পত্রিকা, টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়া যেন আমার কোনো বক্তব্য প্রকাশ না করা হয়, এমন নির্দেশনা জারি ছিল।তবুও এই চাপিয়ে দেওয়া নীরবতার মধ্যেও আমি অধিকার, গণতন্ত্র আর মানুষের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই চালিয়ে গেছি, কারণ সত্যের স্পিরিটকে আদেশ দিয়ে থামানো যায় না।’

তিনি আরও লিখেন, ‘এই পুরো অন্ধকার সময়টায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের ধৈর্য ও প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় প্রতীক। মিথ্যা মামলা, কারাবাস, তাকে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা— এসবই পুরো দেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এক কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিফলন। তবুও তিনি তাঁর গণতান্ত্রিক আদর্শ থেকে কখনো সরে যাননি। তাঁর বিশ্বাস একটাই— অধিকার সবার; ভয় দেখিয়ে দেশকে এগোনো যায় না।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লিখেছেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবেও সেই দুঃসহ সময়ের সাক্ষী। আমার মা, যিনি দেশনেত্রী, নিজ হাতে সহ্য করেছেন তাঁর ছেলেকে জেলে নেওয়া, নির্যাতন করার মানসিক যন্ত্রণা। তাঁর আরেক ছেলেকে আমরা চিরতরে হারিয়েছি। বাংলাদেশের হাজারো পরিবারের মতো আমাদের পরিবারও ছিল লক্ষ্যবস্তু।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু ইতিহাসের একটা সত্য আছে— কষ্ট মানুষকে সবসময় তিক্ত করে না। কখনো কখনো কষ্ট মানুষকে আরো মহান করে তোলে। দেশনেত্রী, আমার মা এটাই প্রমাণ করেছেন। তিনি শিখিয়েছেন— যে অন্যায় আমরা সহ্য করেছি, তা যেন আর কারও জীবনে না আসে। দেশকে বদলাতে হলে, ঘৃণার পথ নয়, ন্যায়-নৈতিকতা আর ক্ষমাশীলতার পথই ভবিষ্যত গড়ে।’

সিএ/এএ

spot_img

আরও পড়ুন

কেএডিআইজেডে চীন–রাশিয়ার বিমান প্রবেশ, দুই দেশের পাল্টা প্রস্তুতি

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের আকাশসীমার কাছাকাছি যৌথভাবে টহল চালিয়েছে...

আজকের স্বর্ণের দাম: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশের বাজারে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) স্বর্ণের দাম ভরিতে ২...

শীতে কাঁপছে কুড়িগ্রাম, তাপমাত্রা নেমে ১১ ডিগ্রিতে

কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতায় জনজীবন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। দিন-রাতের...

কুষ্টিয়ায় সাপের কামড়ের পর জ্যান্ত রাসেলস ভাইপার নিয়ে হাসপাতালে কৃষক

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে কৃষক কুদ্দুস...

কম্পিউটার সিটির মেলায় ছাড়ে পণ্য কেনার পাশাপাশি মিলছে আকর্ষণীয় উপহার

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে চলছে দেশের সর্ববৃহৎ প্রযুক্তিপণ্য...

হবিগঞ্জে ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত শতাধিক

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে দুই...

সারা দিনের অপেক্ষা শেষে জাতীয় ক্রিকেট লিগে চ্যাম্পিয়ন রংপুর

সারা দিনের প্রতীক্ষার পর অবশেষে জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল)...

অনিবার্য কারণে স্থগিত ‘জুলাই কন্যা সম্মেলন’

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জুলাই কন্যা সম্মেলন ২০২৫’ অনিবার্য...

মানবাধিকার রক্ষার অঙ্গীকারে জাতি ঐক্যবদ্ধ—তারেক রহমান

দেশের মানুষ এখন মানবাধিকার রক্ষার অঙ্গীকারে ঐক্যবদ্ধ বলে মন্তব্য...

নাটোর-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ

নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সড়ক...

জাকার্তায় সাততলা ভবনে ভয়াবহ আগুন, নিহত অন্তত ২০

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় একটি সাততলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে...

ফেসবুকে রিচ বাড়াতে মিথ্যা ‘বিয়ে’র ছবি পোস্ট করলেন অভিনেতা শরীফুল

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় এসেছেন অভিনেতা শরীফুল ইসলাম। হঠাৎই বিয়ের...

পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ চাইলে বোনদের প্রাণনাশের হুমকি—অভিযোগ ডিপজলের বিরুদ্ধে

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলের বিরুদ্ধে পৈতৃক...

শীতে ত্বকের ৭টি সাধারণ সমস্যা ও কার্যকর সমাধান

শীতের ঠান্ডা ও শুষ্ক আবহাওয়া ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা কমিয়ে...
spot_img

আরও পড়ুন

কেএডিআইজেডে চীন–রাশিয়ার বিমান প্রবেশ, দুই দেশের পাল্টা প্রস্তুতি

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের আকাশসীমার কাছাকাছি যৌথভাবে টহল চালিয়েছে চীন ও রাশিয়ার বোমারু বিমান। টোকিও ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির সময় এমন সামরিক তৎপরতা...

আজকের স্বর্ণের দাম: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশের বাজারে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) স্বর্ণের দাম ভরিতে ২ লাখ ১১ হাজার ৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জুয়েলার্স...

শীতে কাঁপছে কুড়িগ্রাম, তাপমাত্রা নেমে ১১ ডিগ্রিতে

কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতায় জনজীবন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। দিন-রাতের হিমেল বাতাসে শীতের অনুভূতি আরও বেড়েছে, বিশেষ করে নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষজনকে পড়তে হচ্ছে মারাত্মক দুর্ভোগে। গত...

কুষ্টিয়ায় সাপের কামড়ের পর জ্যান্ত রাসেলস ভাইপার নিয়ে হাসপাতালে কৃষক

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে কৃষক কুদ্দুস আলী শেখের (৬৫) পায়ে রাসেলস ভাইপার সাপ কামড় দেয়। হঠাৎ ছোবলে আতঙ্কিত হলেও তিনি দ্রুত...
spot_img