জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশে কোনো ধরনের রাজনৈতিক দাদাগিরি আর বরদাশত করা হবে না। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেটের আলিয়া মাদরাসা মাঠে ইসলামী ও সমমনা আট দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে একটি দলকে জনগণ লাল কার্ড দেখাবে। ‘এই লাল কার্ড থেকে বাঁচতে গিয়ে কেউ যদি নির্বাচন ভণ্ডুলের চেষ্টা করে, জনগণই তাদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেবে।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘বর্গিরা চলে যাওয়ার পরও দেশের ভেতর যারা সুযোগ পেয়েছে, তারা জনগণের সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। দেশে দেশে বেগম পাড়া বানিয়েছে, কেউ পালাতে গিয়ে খালে-বিলে লুকিয়েছে, কেউ সিলেটবাসীর কাছে কলাপাতায় ধরা খেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্টরা দেশ থেকে পালালেও ফ্যাসিজমের কালো ছায়া এখনো কাটেনি। একদল অপকর্ম করে পালিয়েছে, আরেকদল সেই অপকর্মের দায় কাঁধে তুলে নিয়েছে। কেউ চাঁদাবাজি করে জনগণের ক্ষোভের কারণ হয়েছে, আবার কেউ আরও বেশি শক্তি নিয়ে একই কাজ করছে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘একদল দখলদার হয়ে জনগণের ঘৃণা কুড়িয়েছে, আরেকদল বেপরোয়া দখলদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। একসময় বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের, আলেম-ওলামাকে জেল, নির্যাতন, ফাঁসি ও দেশছাড়া করার যে প্রবণতা ছিল, সেটি এখনো থামেনি।’
তিনি বলেন, ‘প্রশাসনিক ক্যু করে নির্বাচন হাইজ্যাক করার যে সূর্য আঁতুরঘরে মারা গেছে, তা আর বাংলাদেশে উঠবে না। এখন নতুন সূর্য উদিত হবে, সেই সূর্য কোরআন বুকে নিয়ে উঠবে। বাংলাদেশ থেকে অপশাসন দূর হবে, মাঝিমাল্লা, শ্রমিক, ছাত্রসহ সাধারণ মানুষের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’
তিনি দাবি করেন, ‘লুটেরাদের হাত থেকে দেশ উদ্ধার করে দেশপ্রেমিক মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’ যুব সমাজের আকাঙ্ক্ষা এই আন্দোলনের সঙ্গে এক হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা এই স্বপ্নের পথে বাধা দেবে, জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না।’
বিদেশি চাপ বা হুমকি প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, ‘অনেকে বিদেশি দেশের ভয় দেখায়। কিন্তু ইসলামিক ও দেশপ্রেমিক দলের নেতারা হাসিমুখে মৃত্যুকে বরণ করতে পারেন। তাদের ভয় দেখানো অর্থহীন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ চলবে আল্লাহর নির্দেশে এবং জনগণের পছন্দে। যারা বিদেশের পেটে আশ্রয় নিয়েছেন, তারা এখন অখাদ্য গিলতেও পারছে না, ফেলতেও পারছে না। তাদের প্রশ্ন, যাবে কোথায়?’
খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির মাওলানা সারওয়ার কামাল আজিজি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভোলাপমেন্ট পার্টির (বিডিপি) সভাপতি অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল হক চাঁন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, জাতীয় পার্টির রাজনীতি নিষিদ্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করছে জামায়াতসহ সমমনা আট দল। রাজধানীতে তারা একাধিক সমাবেশ করেছে এবং সেই ধারাবাহিকতায় সিলেটে অনুষ্ঠিত হয় আজকের এই সমাবেশ।
সিএ/ইরি


