মানিকগঞ্জে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের সমর্থকদের ওপর হওয়া হামলার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি ঘটনার নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করে হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) এনসিপির ধর্ম ও সম্প্রীতি সেলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মতবিরোধ বা অভিযোগ যাই থাকুক—সহিংসতা, হয়রানি বা আইনহীনতার কোনো বৈধতা নেই। বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যে বাউল, ফকির, সুফি, তাসাওফপন্থিসহ বিভিন্ন ধারার সমৃদ্ধ অবদান রয়েছে। এই বৈচিত্র্য রক্ষা করা মানে মানবিক রাষ্ট্রচিন্তা ও ঐতিহাসিক সম্প্রীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। বাংলাদেশ সবার, এখানে ভিন্নমতকে দমন নয়, বরং শোনা ও বোঝার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ধর্মীয় মত বা ব্যাখ্যা নিয়ে ভিন্নতা থাকতেই পারে এবং তা কখনও বিতর্ক সৃষ্টি করতেও পারে। তবে উত্তরণের পথ কখনই সহিংসতা বা প্রতিশোধ হতে পারে না। দেশের দায়িত্বশীল আলেমসমাজ যুগের পর যুগ শান্তিপূর্ণ দাওয়াত, ধৈর্য, প্রজ্ঞা ও সদাচরণের মাধ্যমে দ্বীনের শিক্ষা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে আসছেন। সমাজে উত্তেজনা বা ভুল ব্যাখ্যা দেখা দিলে এই শান্তিপ্রিয় আলেমসমাজ মানুষকে সংযম, শান্তি ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধার পথে রাখার দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
এনসিপি মনে করিয়ে দিয়েছে, ধর্ম ও সমাজের প্রশ্নে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এই নীতিতে যারা অবিচল থেকেছেন, এনসিপি তাদের অবস্থানের সঙ্গে একাত্ম। শান্তিপূর্ণ দাওয়াত ও জ্ঞানভিত্তিক সংলাপই দ্বীনের প্রকৃত রাহবারি। তাই আজ এই নীতি আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মানিকগঞ্জের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে। অভিযোগ বা মতভিন্নতার সমাধান হবে আইন, ন্যায়বিচার ও শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে, জনতা বা গোষ্ঠীর হাতে নয়। বাউল, ফকির, তাসাওফপন্থিসহ সব সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
উসকানি, বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে ধর্মীয় নেতা, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সম্প্রীতি, সংযম ও পারস্পরিক সম্মানের পথ আরও শক্তিশালী করতে হবে।
সিএ/এমআরএফ


