বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, দেশের নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে এবং নির্বাচন ও গণভোট একসাথে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হতে হবে। অন্যথায়, সাধারণ মানুষ কোনোভাবেই সেটি মেনে নেবে না। তিনি শুক্রবার (৭ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সংহতি বিপ্লব’ র্যালিপূর্ব সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একজন নেতা হিসেবে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, তারেক রহমান সংস্কারের লক্ষ্যে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। এসব কর্মসূচি অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবায়ন শুরু করলে বিএনপি তা সমর্থন জানিয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রস্তাবিত সংস্কারের কাজ এগিয়েছে। গত ১৭ অক্টোবর সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছেছিল এবং যে বিষয়ে একমত হয়েছে, তাতে স্বাক্ষর দিয়েছে বিএনপি।
তবে, ফখরুল অভিযোগ করেন, কিছু বিষয়ে বিএনপি গ্রহণ না করলেও সেটি উপেক্ষা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “উপদেষ্টা কাউন্সিলের একজন সদস্য হঠাৎ সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিন সময় দেওয়া হবে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে। এতদিন ধরে কমিশনে বসে যে সংস্কারের কাজ হয়েছে, সেখানে আমাদের ও অন্যান্য দলের প্রতিনিধি ছিলেন। এত দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পরেও কী হলো? এতে কোনো ফল হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, একটি রাজনৈতিক দল চাপে রাখতে চাইছে, যাতে নির্বাচনের আগেই গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গণভোট ও নির্বাচনের দিন একসাথে অনুষ্ঠিত হতে হবে। কারণ দুটি ভোট আলাদাভাবে হলে অতিরিক্ত অর্থ খরচ হবে এবং নির্বাচনের গুরুত্ব হ্রাস পাবে। তিনি অভিযোগ করেন, আজকের অন্তর্বর্তী সরকার, যাদের বিএনপি সমর্থন দিয়েছে, তারাই এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে যা নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা ব্যাহত করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি অবশ্যই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং ইনশাআল্লাহ বিজয়ী হয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তিনি যুবকদের উদ্দেশে আহ্বান জানান, “আপনারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সামনে এগিয়ে যাই। আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা এবং দৃঢ়তার মাধ্যমে বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, জনগণ সচেতন থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই রুখতে পারবে না। ফখরুল আশা প্রকাশ করেন, আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক। দেশের যুব সমাজকে তিনি উৎসাহিত করেন, “আপনাদের অংশগ্রহণ দেশের ভবিষ্যৎ গড়তে এবং দেশের রাজনৈতিক সংস্কার নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
সিএ/এমআরএফ


