আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সারাদেশের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ও ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রকাশ করেছে। ইসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এবার মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪২ জন এবং হিজড়া ভোটার এক হাজার ২৩৪ জন। যারা ২০২৫ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ১৮ বছর পূর্ণ করেছেন— তারাই এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
এবারই প্রথম, এক বছরের মধ্যে তিন দফায় ভোটার তালিকা সংশোধন ও হালনাগাদ করেছে কমিশন। এই বিপুলসংখ্যক ভোটার সারাদেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের মোট ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য কক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৫ হাজার ১৩৭টি এবং নারীদের জন্য এক লাখ ২৯ হাজার ৬০২টি— সব মিলিয়ে কক্ষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি। এছাড়া ১৪টি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রেও প্রায় ১২ হাজার ভোটকক্ষ রাখা হবে। প্রতিটি ভোটকক্ষে গড়ে তিন হাজার ভোটার থাকার কথা— যদিও প্রয়োজন হলে এই সংখ্যা সমন্বয় করা হতে পারে।
তবে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা আগের নির্বাচনের তুলনায় বৃদ্ধি পেলেও ভোটকক্ষের সংখ্যা কমেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্ষ ছিল দুই লাখ ৬১ হাজার ৫৬৪টি, যা এবার কমে দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ২৪ হাজার ৬৪৯টিতে।
নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে ইসি। কমিশনের প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে— মোট ভোটকেন্দ্রের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই ঝুঁকিপূর্ণ বা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সভায় উপস্থাপিত ধারণাপত্র অনুযায়ী— ৮ হাজার ২২৬টি কেন্দ্রকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’, ২০ হাজার ৪৩৭টি কেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ এবং ১৩ হাজার ৪০০টি কেন্দ্রকে ‘সাধারণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভৌত অবকাঠামো, থানা থেকে দূরত্ব, প্রভাবশালী ব্যক্তি, সীমান্তঘেঁষা এলাকা ও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চলের ভিত্তিতেই এ মূল্যায়ন করা হয়েছে।
ইসি জানিয়েছে, আসন্ন নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ৭ লাখের বেশি আইনশৃঙ্খলা সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি শুক্রবার থেকে সারাদেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ শুরু হবে। নির্বাচনের দিন ১২ ফেব্রুয়ারি— ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে।
সিএ/এএ


