বন্যপ্রাণী উদ্ধার, পরিচর্যা ও প্রকৃতিতে পুনর্বাসনে তরুণদের ইতিবাচক মনোভাব দেশের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বন ভবনে স্বেচ্ছাসেবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, বন্যপ্রাণী নিরাপত্তা ও সংরক্ষণে সাধারণ মানুষের সচেতনতা আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তরুণদের একীভূত কণ্ঠস্বর বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যারা অর্থনৈতিক যুক্তি দেখিয়ে আবাসস্থল ধ্বংসের পক্ষে জনসমর্থন নিতে চান, তাদের প্রতিরোধে সচেতনতা, ভালোবাসা ও সঠিক তথ্য ছড়িয়ে দিতে হবে বলে তিনি জানান।
মানুষ ও প্রকৃতি সহাবস্থানের নৈতিক মূল্যবোধ সামনে রেখে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ জীব জগতের প্রতি সহমর্মিতা ও সংরক্ষণশীল আচরণের শিক্ষা দেয়। অসহায় মানুষ ও অসহায় প্রাণীর পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত মানবিকতা।
তিনি আরও জানান, আগামী বছর ৬৪ জেলায় ৬৪ জন বন্যপ্রাণী কর্মীকে স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। এর ফলে নতুন প্রজন্ম আরও উৎসাহিত হবে এবং প্রতিটি জেলায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে একজন প্রতিনিধিত্বশীল কর্মী এগিয়ে আসবেন।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমনে নতুন ইউনিট গঠনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার বলে জানান উপদেষ্টা। পাশাপাশি উদ্ধার কার্যক্রম আরও কার্যকর করতে আধুনিক সরঞ্জাম ও পরিবহন সহায়তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মতবিনিময়সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. মো. ছগীর আহমেদ, জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস অনুষদের প্রতিষ্ঠাতা ডিন ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদার এবং বিবিসিএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মোল্যা রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়।
এর আগে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে ‘বাংলাদেশ এনার্জি কনফারেন্স ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। সেখানে তিনি সরকারি ভবনে রুফটপ সোলার স্থাপন, পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে স্বচ্ছ সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সিএ/এএ


