জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের সম্মতি নিশ্চিত করতে গণভোট আয়োজনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো প্রাথমিকভাবে একমত হয়েছে। তবে গণভোটের সময়সূচি নিয়ে এখনো মতভেদ রয়েছে।
বিএনপি ও কয়েকটি দল চায় জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হোক, যাতে ভোটাররা আলাদা ব্যালটপেপারে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে সনদটির প্রতি সমর্থন জানাতে পারেন। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী গণভোট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে করার পক্ষে, যাতে পরবর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগেই সনদটি বাস্তবায়ন করা যায়। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনো স্পষ্টভাবে তাদের অবস্থান জানায়নি।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “জনগণের সম্মতি নেওয়ার জন্য গণভোট আয়োজনের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার প্রথম বড় ধাপ।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, অন্যান্য সংবিধানগত ও আইনি বিষয়েও দলগুলো দ্রুত ঐকমত্যে পৌঁছাবে। কমিশন শিগগিরই সরকারের কাছে সনদ বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ পাঠাবে।
সনদটিতে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবনা রয়েছে। এর অর্ধেকের জন্য সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন এবং বাকি অর্ধেক বিদ্যমান আইন বা সরকারি আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য। ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পর গঠিত সংসদ সংস্কারগুলো দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর ও টেকসই করতে কাজ করবে—এতদিকেও রাজনৈতিক দলগুলো একমত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “সনদটির জনসমর্থন নিশ্চিত করতে গণভোট অপরিহার্য। ভোটে জনগণ ‘হ্যাঁ’ বললে সংসদও তা মানতে বাধ্য।” তিনি আরও বলেন, গণভোট আয়োজনের জন্য কোনো সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই, কারণ হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই রেফারেন্ডামের আর্টিকেল ১৪২ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে।
জামায়াত চায় গণভোট নির্বাচন হওয়ার আগে, সম্ভব হলে নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাসে আয়োজন করা হোক। তাদের সহ-সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান আজাদ জানিয়েছেন, “ফল যাই হোক না কেন, জনগণের রায় মেনে নেব।”
এনসিপি এখনও স্পষ্ট করেনি তারা গণভোট নির্বাচন আগে নাকি নির্বাচনের দিন আয়োজন করতে চায়। দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “প্রায় সব রাজনৈতিক দল আইনি ভিত্তি আগে নিশ্চিত করতে একমত হয়েছে। পরবর্তী সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা পালন করতে হবে—আইন প্রণয়ন ও সংবিধান সংশোধন দুই ক্ষেত্রেই।”
সিএ/এমআর