Home বাংলাদেশ জাতীয় মাওঃ সাদ সাহেবের যত ভ্রান্ত উক্তি

মাওঃ সাদ সাহেবের যত ভ্রান্ত উক্তি

0

বেশ কিছুদিন যাবৎ মাওঃ সাদ সাহেবকে কেন্দ্র করে তাবলীগ জামাতের মধ্যে একটি সংকট দেখা দিয়েছে। আর এই সংকট সাম্প্রতিই আরো ভয়ানক রূপ ধারন করে মহাসংকটে পরিনত হয়েছে।

কয়েক বছর আগ থেকেই মাও সা’দ সাহেব ইসলাম ও উলামাদের বিরোধীতা করে কোরআন ও হাদীসের অপব্যখ্যা দিয়ে ভ্রান্ত আকিদা পোষন করে কিছু বিভ্রান্তিমুলক বক্তব্য দিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। তিনি এমন কিছু মনগড়া তাফসীর আর ফতুয়া দিয়ে সাধারন জনগণের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন, যা ইতিপূর্বের মুফতী আর মুফাস্সিরগণের পূর্ণ বিপরীত। ইমান ও আকিদার পরিপন্থী এবং কোরআন ও হাদীসের সপূর্ণ বিরোধী। তিনি কেবল সাহাবীই নয় স্বয়ং খোদা তায়ালা সম্পর্কেও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যাচ্ছিলেন।

ওলামায়ে দেওবন্দ তার এই সকল উক্তি ও আকিদাগুলো থেকে ফিরে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সকলের সাথে বিরোধীতা করে নিজেকে সঠিকই প্রমান করতে হক পথে আছেন এই বলে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। ফলে, তার সাথে উলামায়ে দেওবন্দ ও তার উস্তাদ ও উস্তাদসমতুল্য নিযামুদ্দিন মারকাযের প্রধান মুরব্বি ও সূরার সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয় এবং তাদের মাঝে বেশ দুরত্বের সৃষ্টি হয়। তাকে বারবার বুঝিয়েও সঠিক পথে না আনতে পারায় দিল্লির নিযামদ্দিন থেকে সূরার অন্য মুরব্বি সদস্যরা বের হয়ে অন্যত্র চলে যান।

এরই ধারাবাহিতায় বাংলাদেশের সকল আলেম ও আহলে ইলমরা তারা বিরোধীতায় লিপ্ত হন এবং তাকে সঠিক রাস্তায় ফিরে আসার পরামর্শ দেন। এমনকি বাংলাদেশ থেকে উক্ত বিষয়ের সঠিক তথ্য ও সকলের সাথে পরামর্শের জন্য ৫ সদস্যের এক কমিটি গত ২৫ শে ডিসেম্বর ভারত সফরে যান। ফিরে এসে কমিটির উক্ত ৫ সদস্য, সাম্প্রতিক নিযুক্ত তাবলীগের ৫ উপদেষ্টা ও তাবলীগের ১০ সূরা মিলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে ও তার তত্ত্বাবধানে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে সা’দ সাহেব বাংলাদেশে আসতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সা’দ সাহেবের কিছু ভক্তবৃন্দের সহযোগীতায় মাওঃ সা’দ সাহেব গতকাল বাংলাদেশে চলে আসেন।

  1. এদিকে আলেমরা উলামারা তাদের পূর্ব সিদ্বাস্তে বহাল থেকে তার সকল কথা প্রত্যাহার করার পূর্বে তাকে ইজতেমার মাঠে উপস্থিত হতে বাঁধা দেয়ার জন্য বিমানবন্ধর ঘেরাও করে। কিন্তু সেখান থেকে সা’দ সাহেব চলে আসায় ইজতেমার মাঠ ও কাকরাইল মসজিদ ঘেরাও করার জন্য একত্রিত হতে থাকে। বিকেল থেকে সারারাত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কাকরাইলে অবস্থান করতে গেলে পুলিশ তাদের বাঁধা দিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।

আজ সকাল থেকে তারা পুনরায় কাকরাইল ঘেরাও করার কর্মসূচি করলেও পুলিশের কড়া নিরাপত্তার কারনে সেখানে ভীড়তে পারেননি। পরে তারা বাইতুল মোকারমের সামনে সমাবেশের আহবান করে বিকেল পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করে।

সর্বশেষ সংবাদ পাওয়া পর্যন্ত জানা যায় যে, সকল প্রতিনিধি ও উপদেষ্টা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত উপনীত হয়েছেন যে, মাওঃ সা’দ সাহেব ইজতেমার মাঠে অবস্থান করবেন না। বরং আগামীকালই দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা করে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন।

সা’দ সাহেবের ভ্রান্ত উক্তি ও আকিদাসমূহ

১.ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রাখা হারাম। এবং পকেটে ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রেখে নামাজ হয় না। যে আলেমগন ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রাখাকে ‘জায়েজ’ বলেন তারা উলামায়ে ‘ছু’। বারবার কসম খেয়ে তিনি বলেন কারা হলেন উলামায়ে ‘ছু’। এমন আলেমররা হলো গাধা গাধা গাধা।

২. মোবাইলে কুরান শরীফ পড়া এবং শোনা প্রস্রাবের পাত্র থেকে দুধ পান করার মতো।

৩. কুরআন শরীফ শিখিয়ে যারা বেতন গ্রহন করেন, তাদের বেতন গ্রহন বেশ্যার উপার্জনের চেয়েও খারাপ। যে ইমাম এবং শিক্ষক বেতন গ্রহন করেন, বেশ্যারা তাদের আগে জান্নাতে যাবে।

৪. রাসূল সঃ দাওয়াত ইলাল্লাহর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইশার নামাজকে পর্যন্ত বিলম্ব করে পড়েছেন। অর্থ্যাৎ নামাজের চেয়ে দাওয়াতের গুরুত্ব বেশি।

৫. হযরত মুসা আঃ দাওয়াত ছেড়ে দিয়ে কিতাব আনতে চলে গেছেন। দাওয়াত ছেড়ে চলে যাওয়ার কারনে ৫ লাখ ৭৭ হাজার লোক মুরতাদ হয়ে গেছে।

৬. হযরত মুসা আঃ থেকে বগ এক ভুল হয়ে গেছে এবং তিনি এক অপরাধ করে ফেলেছেন- জামাত এবং কওমকে ছেড়ে তিনি আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের জন্য নির্জনতা অবলাম্বন করেছেন।

৭. হযরত মুসাঃ কর্তৃক হযরত হারুন আঃ কে নিজের স্থলাভিষিক্ত বানানো অনুচিৎ কাজ হয়েছে।

৮. সকাল-সকাল কুরআন তেলোয়াত করা এবং নফএ নামাজ পড়ার তো একটা অর্থ বুঝে আসে। কিন্তু আল্লাহ আল্লাহ বলে যিকির করে কী অর্জন হয়? কিছুই অর্জন হয় না।

৯.এই এক তাবলীগই নবুওয়াতের কাজ। এ ছাড়া দ্বীনের যত কাজ আছে: দ্বীনি ইলম শিখানো, দ্বীনি ইলম শিখা, আত্নশুদ্ধি, কিতাবাদী রচনা করা কোনোটাই নবুওয়াতের কাজ না।

১০. কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে জিজ্ঞেস করবেন, তালীমে বসেছিলে কিনা? গাশ্ত করেছিলে কিনা?

১১. প্রত্যেক সাহাবী অপর সাহাবীর বিরুদ্ধাচারণ করেছেন।

১২ হেদায়াতের সম্পর্ক যদি আল্লাহর হাতে হতো, তাহলে নবী পাঠাতেন না।

১৩. কোরআন শরীফ বুঝে-শুনে তেলোয়াত করা ওয়াজিব। তরজমা না জেনে তেলোয়াত করলে তরকে ওয়াজিবের গোনাহ হবে।

১৪. আপনাদের কাছে সবচাইতে বড় গুনাহ-চুরি, যিনা ঠিকই একটা বড় গুনাহ, তবে তার চাইতে বড় গুনাহ হলো খুরুজ (আল্লাহার রাস্তায় বের) না হওয়া।

শুধু ১৪ টা উক্তিতেই তিনি ক্ষ্যান্ত হননি। ২৫ এরও অধিক বিষয়ে ভ্রান্ত আকিদা পোষন করে আসছেন তিনি।
বৃহৎ এই পবিত্র তাবলীগ জামাতের মধ্যে কোরআন ও হাদীসের ভুল ব্যাখ্য দিয়ে পুরো জামাতের মধ্যে বিষ ছড়িয়ে দিয়ে তিনি নিজেকে কী প্রমাণ করতে চান?

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version