এলএনজি, সার ও চাল আমদানিসহ মোট ১০টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৯৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে জানানো হয়, নতুন বছরের জানুয়ারিতে ব্যবহারের জন্য স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের ভিত্তিতে এক কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান মেসার্স পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এই কার্গো সরবরাহ করবে। প্রতি ইউনিট এমএমবিটিইউ ৯ দশমিক ৯৯ ডলার দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ৪২০ কোটি ৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।
বৈঠকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে দুই লটে মোট ৮০ হাজার টন সার আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতি টন ৪১৩ দশমিক ৪৬ ডলার দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৪০৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড এই চাল সরবরাহ করবে। প্রতি টন ৩৫১ দশমিক ১১ ডলার দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এতে মোট ব্যয় হবে ২১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
এ ছাড়া নওগাঁ ও বগুড়ায় একটি করে সারের গুদাম নির্মাণের পূর্ত কাজের প্রস্তাবও অনুমোদন পেয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে নওগাঁয় ২৫ হাজার টন এবং বগুড়ায় ২০ হাজার টন সার ধারণক্ষমতার গুদাম নির্মাণ করা হবে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো। আর নির্বাচন কমিশন মনে হয় আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ খুব ভালোভাবেই করেছে।’
একসঙ্গে গণভোট হওয়ার ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ খরচ বাড়তে পারে—এমন আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা তো নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। প্রস্তাব পাঠাতে নির্বাচন কমিশনকে বেঁধে-ধরে বলা হবে না। তবে এখন পর্যন্ত কোনো চাহিদাপত্র আসেনি। যখন আসবে, তখন বুঝতে পারব এবং তাড়াতাড়িই প্রক্রিয়া করব।’
দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি পুরোপুরি সন্তোষজনক না হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশের সামগ্রিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। এটা শুধু আমার ব্যক্তিগত মত নয়, বিভিন্ন দাতা সংস্থাসহ অনেকেই একই কথা বলছেন।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনো দেশের অর্থনীতির সব খাত একসঙ্গে ভালো করবে—এমন প্রত্যাশা করা বাস্তবসম্মত নয়। বিশ্বের কোনো দেশেই এমন নেই, যেখানে সব খাত একযোগে খুব ভালোভাবে চলতে পারে। এটা সম্ভব নয়। অর্থনীতির সব দিকের ওপর সরকার এককভাবে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না। মন্ত্রণালয়ে বসে আমি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। এটা সম্ভব নয়।’
সিএ/এএ


