মুন্সিগঞ্জ–৩, দিনাজপুর–৫ এবং পটুয়াখালী–২ আসনে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থীদের পরিবর্তনের দাবিতে সড়ক অবরোধ, মশালমিছিল, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি এবং কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত দেশজুড়ে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি চলে।
৪ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে দ্বিতীয় দফায় ৩৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে মুন্সিগঞ্জ–৩ আসনে মনোনয়ন পান কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান; দিনাজপুর–৫ আসনে মনোনয়ন পান এ কে এম কামরুজ্জামান; আর পটুয়াখালী–২ আসনে মনোনয়ন পান সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম তালুকদার। ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূলে অসন্তোষ দেখা দেয়।
মুন্সিগঞ্জে মশালমিছিল ও বিক্ষোভ
মুন্সিগঞ্জ–৩ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে হাজারো নেতা–কর্মী সন্ধ্যায় শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় মশালমিছিল করেন। বিকেলের পর থেকে মহিউদ্দিন আহমেদের সমর্থকেরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। এতে প্রধান সড়কের এক পাশ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মাগরিবের নামাজের পর মশাল হাতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কার্যালয়ের সামনে শেষ হয়।
বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতোয়ার হোসেন, কাজী আবু সুফিয়ান, শহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমানসহ অন্যরা। নেতারা বলেন, তৃণমূলে গ্রহণযোগ্য একমাত্র প্রার্থী ছিলেন মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। তাঁকে বাদ দিয়ে ‘অযোগ্য’ প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কামরুজ্জামানকে মুন্সিগঞ্জ শহরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন এবং প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানান।
পার্বতীপুরে আধাবেলা শাটডাউন
দিনাজপুর–৫ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে পার্বতীপুরে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করা হয়। সকাল ১০টার দিকে পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভ হলে সৈয়দপুর, দিনাজপুর, ফুলবাড়ী, রংপুরগামী পরিবহনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পার্বতীপুর রেলওয়ে হেড ডিপো থেকেও তেল সরবরাহ বন্ধ থাকে। টার্মিনাল গোলচত্বরে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করা হয়।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদ্দাম হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ব্যবসায়ীরা দুপুর পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ রাখেন। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন সালেহ আহমেদ, আকরাম হোসেন মাস্টার, মোখলেছুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
বাউফলে কাফনের কাপড় পরে মিছিল
পটুয়াখালী–২ (বাউফল) আসনে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির একাংশের নেতা–কর্মীরা। বিকেল সোয়া চারটার দিকে উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের হয়ে পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে পুনরায় কার্যালয়ে শেষ হয়। মিছিলের শুরুতে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল জব্বার মৃধা বলেন, মনোনীত প্রার্থী শহিদুল আলম দীর্ঘদিন কোনো আন্দোলন–সংগ্রামে ছিলেন না, দুর্দিনে নেতা–কর্মীদের পাশে দাঁড়াননি। ২০০৮ সালে মনোনয়ন না পেয়ে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। এমন নেতাকে তাঁরা মেনে নেবেন না বলে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানান তিনি।
সিএ/এএ


