বিশ্ব মানবাধিকার দিবস–২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, বর্তমান সময়ের নারীবিদ্বেষী অপপ্রচারের ধারায় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। প্রগতিশীল ও যুক্তিবাদী সমাজ গঠনের স্বার্থে রোকেয়ার ভাবনা ও অবদান নিয়ে নতুন করে আলোচনা জরুরি হয়ে উঠেছে।
সোমবার রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কার্যালয়ে ‘শুধু সমাজসংস্কারক নয়, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, রোকেয়ার কাজ এতই গভীর ও বহুমাত্রিক যে তাঁকে এক গণ্ডিতে রাখা সম্ভব নয়। তিনি সমাজে নারীর অধিকার ও অবস্থান নিয়ে যে পাঁচটি মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছেন—প্রথা ভাঙা, নারী–পুরুষ অসমতা চিহ্নিত করা, চিন্তার বিকাশ, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন এবং সংগঠিত হওয়ার প্রয়োজন—এসব আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রদায়িকতা ও সংকীর্ণ ধর্মাচরণকে নারীর অগ্রগতি আটকাতে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা রোকেয়া বহু আগে সতর্ক করেছিলেন। তাই রোকেয়ার চিন্তা–চর্চা আজ আরও বেশি জরুরি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, যুক্তিবাদী সমাজ গঠনে বিতর্কের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তি–বুদ্ধির লড়াই মানুষকে অন্যের মতামতকে সম্মান করার শিক্ষা দেয়। রোকেয়ার স্বল্প জীবনে নারীর উন্নয়নে অসাধারণ অবদান রয়েছে, যা যথাযথভাবে বোঝার জন্য তরুণদের সময় ও আগ্রহ প্রয়োজন।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় পক্ষ দল বিজয়ী হয়।
শ্রেষ্ঠ বক্তারা:
প্রথম: মাহামুদ খালিদ (অপরাধবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
দ্বিতীয়: অর্ণব রায় পার্থ (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
তৃতীয়: ফজলে রাব্বী সরকার (ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
অংশগ্রহণকারীদের শ্রেষ্ঠ তিন:
প্রথম: মারওয়া জান্নাত মাইশা (আইডিয়াল কলেজ)
দ্বিতীয়: মুবিনা আক্তার মুন (অপরাধবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
তৃতীয়: উম্মে ফাতেমাতুজ যোহরা (উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
এ ছাড়া ই-পোস্টার প্রতিযোগিতায় নয়জন বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়—হুমায়রা তাবাসসুম, মাহি বিনতে মাসুদ, কৃষ্ণপদ সরকার, সাবরিনা, সৈয়দ রাশিদ আসিফ, মহুয়া চক্রবর্তী, আমানুর রহমান, আনোয়ার রহমান ও মারওয়া জান্নাত মায়শা।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।


