চলচ্চিত্রের মানুষগুলোর সঙ্গে আমার কোনো দূরত্ব নেই। এমনকি এখানে আমাকে কোনো প্রকার বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি। যে কয়টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছি সবক’টিতে সুস্থ পরিবেশেই অভিনয় করেছি। তবুও অনেকের প্রশ্ন, আমাকে নতুন চলচ্চিত্রে দেখা যায় না কেন? সত্যি বলতে, আমি চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চাই না-এভাবেই বর্তমানে চলচ্চিত্রে অভিনয় না করা প্রসঙ্গে জানালেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অহনা। তিনি আরো বলেন, ছোট পর্দায় অভিনয় করতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
ছোট পর্দার অনেকেই বড় পর্দায় কাজ করতে আগ্রহী। বলতে পারি, আমি তার উল্টো পথে হাঁটছি। ২০০৮ সালে রকিবুল আলম রকিবের ‘চাকরের প্রেম’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন অহনা। সর্বশেষ তাকে পি এ কাজল পরিচালিত ‘চোখের দেখা’ ছবিতে দেখা গেছে। এতে সায়মনের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। তবে ছবিটি দর্শকদের মধ্যে সাড়া ফেলতে পারেনি। বর্তমানে অহনা ছোট পর্দার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে তার অভিনীত একাধিক ধারাবাহিক নাটক। উল্ল্যেখযোগ্য ধারাবাহিকগুলো হলো ‘রসের হাড়ি’, ‘নোয়াশাল’, ‘ভালোবাসা কারে কয়’, ‘ছায়বিবি’, ‘সালিস মানি তাল গাছ আমার’ ও ‘কমেডি-৪২০’। অহনাকে এই সময়ে কমেডি নির্ভর নাটকে বেশি দেখা যায় বলে অনেকে মন্তব্য করেন। এই প্রসঙ্গে তার অভিমত কি জানতে চাইলে বলেন, আমার অভিনীত বেশ কিছু ধারাবাহিক নাটক কমেডি ধরনের। কিন্তু এগুলোতে আমার চরিত্র সিরিয়াস।
আমি সিরিয়াস ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে পছন্দ করি। যারা আমাকে নিয়ে এই ধরনের আলোচনা করেন তারা হয়তো নাটক না দেখেই বলছেন। ধারাবাহিকের বাইরে একক নাটকেও নিয়মিত অভিনয় করছেন এ অভিনেত্রী। সম্প্রতি আকাশ রঞ্জনের ‘অত্মপরিচয়’ শিরোনামের একটি একক নাটকের কাজ শেষ করেছেন তিনি। আগামী মাস থেকে শুরু করবেন ঈদের জন্য বিশেষ নাটক-টেলিছবির শুটিং। অহনার সমসাময়িক অনেক অভিনেত্রী নিয়মিত অভিনয় করছেন।
তবে তার কাছে মেহজাবিন ও মৌসুমী হামিদের অভিনয় বেশ ভালো লাগে বলে জানান। তাদের সম্পর্কে এই মডেল-অভিনেত্রী বলেন, মৌসুমী হামিদ অনেক চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করেন। যেটি সবার পক্ষে করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর মেহজাবিন চরিত্রের মধ্যে গভীরভাবে ঢুকে যেতে পারে বলে আমি মনে করি। আলাপনে অহনা শোবিজের এই সময়ের অভিনেত্রীদের আলোচনা-সমালোচনা নিয়েও কথা বলেন। তার ভাষ্য, আমরা প্রত্যেকে নিজের কমিটমেন্টে ঠিক থাকলে কাউকে সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় না। পেশার ক্ষেত্রে অনেকেই দায়সারা থাকেন। এটি ঠিক না। আবার কেউ কেউ আছেন হয়তো খবরের শিরোনামে আসার জন্য বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেন। সেটি তাদের ব্যক্তিগত বিয়ষ। কিন্তু তাকে মনে রাখা প্রয়োজন তার কোনো মন্তব্যের কারণে যেন তার অন্য কোনো সহকর্মীর ক্ষতি না হয়।
এদিকে অভিনয়ের বাইরে অহনা ব্যাবসায়ীর খাতায়ও নাম লিখিয়েছেন। রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বার সেক্টরে রয়েছে তার বিউটি পার্লার ‘অহ-মি’। এরইমধ্যে সেবাদান কারীদের কাছ থেকে তিনি বেশ প্রশংসা পাচ্ছেন বলে জানান। আসছে ঈদে অহনা সেবাদানকারীদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ রাখছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার এখানে অনেক দূর থেকেও অনেকে সেবা নিতে আসেন। আমি তাদের কথা ভেবে আসছে ঈদে বিশেষ ছাড় ও প্যাকেজের ব্যবস্থা করছি। রমজান থেকেই সেটি চালু হবে। ব্যবসায় আসা আমার স্বপ্ন ছিলো। আমি সেই স্বপ্ন পূরণ করার প্রয়াসে ব্যস্ত। আমি বিশ্বাস করি আগামীতেও আমার এই স্বপ্নের পথে সবার সহযোগিতা পাবো।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে ‘বিনোদন বিচিত্রা ফটোসুন্দরী’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন অহনা। সেখানে প্রথম রানার-আপ হয়েছিলেন তিনি। বিজ্ঞাপনে কাজ করার মধ্য দিয়ে মডেল হিসেবেই মিডিয়াতে অভিষেক ঘটেছিল এই গ্ল্যামারকন্যার।