সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় সদ্য জন্ম নেওয়া এক নবজাতক কন্যাকে হত্যার পর টয়লেটে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে পাষণ্ড মায়ের বিরুদ্ধে। পরে নবজাতকের মরদেহ বাড়ির পেছনে মাটিচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলে বিষয়টি টের পেয়ে যান প্রতিবেশীরা। ঘটনা জানাজানি হলে নবজাতকের মা ও তার স্বজনরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের বাচড়া ভুতের দিয়ার গ্রামে। নিহত নবজাতকের মা জান্নাতুল ফেরদৌস ওই গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে জান্নাতুল ফেরদৌসের বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের নন্দলালপুর গ্রামের নবী মণ্ডলের ছেলে করীম মণ্ডলের সঙ্গে। বিয়ের ছয় মাস পর পারিবারিক কলহের জেরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় এবং জান্নাতুল ফেরদৌস বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
এর মধ্যে করীম মণ্ডল দ্বিতীয় বিয়ে করলে সেই স্ত্রী পরকীয়া প্রেমিকের প্ররোচনায় গত ২৭ অক্টোবর করীম মণ্ডলকে গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ডিভোর্সের পর জান্নাতুল ফেরদৌসের গর্ভে করীম মণ্ডলের সন্তান বেড়ে উঠলেও বিষয়টি গোপন রাখে তার পরিবার। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে জান্নাতুল ফেরদৌস একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রসবের পর জান্নাতুল ফেরদৌস ও তার মা মিলে নবজাতকটিকে হত্যা করে বাড়ির টয়লেটে রেখে দেন।
পরদিন বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ভোরে নবজাতকের মরদেহ মাটিচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ির পেছনে গর্ত খুঁড়তে গেলে প্রতিবেশীরা বিষয়টি আঁচ করতে পারেন। দ্রুত ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্তরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় করীম মণ্ডলের মা নাজমা বেগম, বাবা নবী মণ্ডল ও বোনজামাই মো. রমজান আলী বলেন, করীমের সঙ্গে জান্নাতুল ফেরদৌসের ডিভোর্স হয়ে গেলেও তার গর্ভে করীমের সন্তান ছিল। করীম হত্যার পর সেই সন্তানই ছিল তার একমাত্র স্মৃতি। সেই নবজাতককেও জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই হত্যা করে করীমের শেষ স্মৃতিটুকুও শেষ করে দেওয়া হলো।

বিষয়টি নিয়ে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত নবজাতকের মা পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে। বাড়ির অন্য সদস্যরাও পলাতক।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ওয়াসিম সেখ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিএ/জেএইচ


