ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে বিএনপি অনেক আগে থেকেই দলীয় কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী রফিকুল ইসলামকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছিল। মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি নির্বাচনী এলাকায় দিন-রাত গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ, উঠানবৈঠক ও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
তবে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়ের একদিন আগে, রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সোনাতলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম আহসানুল তৈয়বকেও দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত মনোনয়নের চিঠি এ কে এম আহসানুল তৈয়ব নিজে ফেসবুকে প্রকাশ করেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, কাজী রফিকুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকে এ কে এম আহসানুল তৈয়ব ঢাকায় অবস্থান করছিলেন এবং অসুস্থতার কথা বলে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নেননি। তাঁর সমর্থিত নেতা-কর্মীরাও নির্বাচন এলাকায় সক্রিয় ছিলেন না। তবে রোববার রাতে দলীয় মনোনয়নের চিঠি হাতে পাওয়ার পর তিনি এলাকায় ফিরে এসে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম (বাদশা) দাবি করেছেন, বগুড়া-১ আসনে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন হয়নি। কাজী রফিকুল ইসলামই দলের মূল প্রার্থী। কৌশলগত কারণে এ কে এম আহসানুল তৈয়বকেও প্রাথমিকভাবে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আহসানুল তৈয়ব দলের ‘ড্যামি’ প্রার্থী।”
রেজাউল করিম বাদশা আরও বলেন, এ কে এম আহসানুল তৈয়ব রোববার গুলশানের দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেন। সে সময় তিনি বগুড়া-১ আসনে কাজী রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন। পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাঁকে আশ্বস্ত করেন যে কোনো কারণে মূল প্রার্থী মনোনয়ন বাতিল হলে তিনিই দলের প্রার্থী হবেন।
কাজী রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। আহসানুল তৈয়বকে ড্যামি প্রার্থী করা হলেও শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রতীক তাঁকেই দেওয়া হবে বলে তিনি আশাবাদী। এ বিষয়ে এ কে এম আহসানুল তৈয়বের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া-১ আসনটি ১৯৭৩ সালের নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ওয়াজেদ হোসেন তরফদার নির্বাচিত হন। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আসনটি বিএনপির দখলে ছিল। ২০০৮ সালে বিএনপি মনোনয়ন দেয় মোহাম্মদ শোকরানাকে, তবে তিনি পরাজিত হন। ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালে বিএনপির প্রার্থী কাজী রফিকুল ইসলামকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল মান্নান। ২০১৯ সালে তাঁর মৃত্যু হওয়ার পর উপনির্বাচনে ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁর স্ত্রী সাহাদারা মান্নান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।


