দেশীয় পণ্যের প্রচার, রপ্তানি সক্ষমতা বাড়ানো এবং উদ্যোক্তাদের নতুন বাজারের সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ৩০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ-২০২৬)। পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে মাসব্যাপী এ মেলার শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, এবার মেলায় অনলাইনে স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ, ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা অনলাইনে টিকিট কেটে কিউআর কোড স্ক্যান করে প্রবেশ করতে পারবেন। যাতায়াত সহজ করতে বিআরটিসির ডেডিকেটেড শাটল বাসের পাশাপাশি স্বল্পমূল্যে ‘পাঠাও’ সার্ভিস যুক্ত হয়েছে।
মেলায় থাকছে বিশেষ ‘Export Enclave’, পাশাপাশি ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘বাংলাদেশ স্কয়ার’। উদ্যোক্তাদের জন্য সম্ভাবনাময় খাতভিত্তিক সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
পরিবারবান্ধব ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মেলায় থাকছে ইলেকট্রনিক্স ও ফার্নিচার জোন, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নার, শিশুদের জন্য দুটি শিশু পার্ক, উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। নারী উদ্যোক্তা, প্রতিবন্ধী ও হস্তশিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য সংরক্ষিত স্টল রাখা হয়েছে।
পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ হিসেবে পলিথিন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক নিষিদ্ধ; বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ সরবরাহ করা হবে।
পূর্বাচলে অনুষ্ঠিত মেলায় এবার ৩২৪টি প্যাভিলিয়ন, স্টল ও রেস্টুরেন্ট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে প্রদর্শিত হবে বস্ত্র, মেশিনারি, ফার্নিচার, ইলেকট্রনিক্স, পাটজাত পণ্য, চামড়া ও জুতা, কসমেটিক্স, হোম ডেকর, খেলনা, স্টেশনারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পসহ নানা পণ্য।
দর্শনার্থীদের জন্য কুড়িল বিশ্বরোড, ফার্মগেট, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ২০০টির বেশি শাটল বাস চলবে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ টাকা থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে। মেলা চলবে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিট থেকে রাত ৯টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত।
টিকিট মূল্য: প্রাপ্তবয়স্ক ৫০ টাকা, শিশু (১২ বছরের নিচে) ২৫ টাকা। মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও জুলাই আন্দোলনে আহতরা বিনা মূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, এপিবিএন ও গোয়েন্দা সংস্থা; সিসিটিভি, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর এবং ফায়ার সার্ভিস সার্বক্ষণিক থাকবে। স্বাস্থ্যসেবার জন্য থাকবে ফ্রি প্রাথমিক চিকিৎসা, মানসম্মত খাবারের জন্য প্রিমিয়ার রেস্টুরেন্ট ও ৫০০ আসনের ক্যাফেটেরিয়া। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে দুই শতাধিক কর্মী দায়িত্ব পালন করবেন। মোট ৫০০ গাড়ির জন্য দ্বিতল পার্কিংসহ ৩টি বড় পার্কিং এলাকা প্রস্তুত থাকবে।
১৯৯৫ সাল থেকে আয়োজিত ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা এবারও দেশীয় পণ্যের প্রসার, উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সিএ/এএ


