বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তাঁর এই প্রত্যাবর্তন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যেমন ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে।
বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে তারেক রহমান ৩০০ ফুটের জুলাই-৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে পূর্বাচলে আয়োজিত গণসংবর্ধনার মঞ্চে পৌঁছান। সেখানে লাখ লাখ নেতা-কর্মী ও সমর্থকের উদ্দেশে তিনি বক্তব্য দেন। সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি যেকোনো মূল্যে দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার আহ্বান জানান।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি, আল-জাজিরা, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য হিন্দু, ডন ও এনডিটিভিসহ প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো পৃথক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। অধিকাংশ প্রতিবেদনে তাঁকে বাংলাদেশের ‘সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনে জানায়, প্রায় ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে দলটির আশা। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী পদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। বিমানবন্দর থেকে সংবর্ধনাস্থল পর্যন্ত পথে লাখ লাখ সমর্থক সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে দলীয় পতাকা নাড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানান।
রয়টার্স আরও জানায়, ৬০ বছর বয়সী তারেক রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে। তিনি ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে বসবাস করছিলেন এবং ২০১৮ সাল থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। দেশে ফেরার সময় তিনি জুতা খুলে খালি পায়ে দেশের মাটিতে পা রাখেন এবং একমুঠো মাটি হাতে তুলে নেন।
এএফপি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, বিপুলসংখ্যক উচ্ছ্বসিত সমর্থকের সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা তারেক রহমান বাংলাদেশে ফিরেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় পৌঁছানোর পর তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে হাত মেলান এবং এ সময় তাঁর স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
বিবিসি জানায়, ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে এগিয়ে থাকা তারেক রহমান। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তাঁর নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিরতে চায় বিএনপি।
আল-জাজিরা জানায়, দীর্ঘদিন বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাবশালী একটি পরিবারের উত্তরাধিকারী ও প্রধান বিরোধী দলের নেতা তারেক রহমান প্রায় ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর দেশে ফিরেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদের শীর্ষ প্রতিযোগী হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে প্রায় দুই দশক নির্বাসনে থাকার পর তারেক রহমান দেশে ফিরেছেন। নির্বাচনী মৌসুম শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে তাঁর এই প্রত্যাবর্তন রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ভারতের দ্য হিন্দু জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে ঢাকায় ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক অস্থিরতার এক জটিল সময়েই তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করেছেন।
পাকিস্তানের ডন জানায়, নির্বাচনের আগে ১৭ বছর নির্বাসনের পর তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে। এনডিটিভি জানায়, ঢাকার বিমানবন্দরে তারেক রহমান ও তাঁর পরিবারকে স্বাগত জানান হাজার হাজার বিএনপি সমর্থক।
সিএ/জেএইচ


