ভারতীয় ক্রিকেটে আরেকটি স্মরণীয় দিন যুক্ত হলো শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর)। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দ্রুততম ১৬ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে শচিন টেন্ডুলকারের দীর্ঘদিনের রেকর্ড ভেঙেছেন বিরাট কোহলি। একই দিনে আলাদা একটি কীর্তিতে নাম লেখান রোহিত শর্মা। এই ফরম্যাটে সর্বোচ্চ ১৫০ বা তার বেশি রানের ইনিংস খেলার তালিকায় তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে অবস্থান করছেন।
বেঙ্গালুরুতে অন্ধ্রপ্রদেশের বিপক্ষে বিজয় হাজারে ট্রফির ম্যাচে দিল্লির হয়ে খেলতে নেমে কোহলি এই অনন্য কীর্তি গড়েন। ১০১ বল মোকাবিলা করে তিনি করেন ১৩১ রান। তার ইনিংসে ছিল ১৪টি চার ও ৩টি ছক্কা। কোহলির এই দাপুটে ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে অন্ধ্রপ্রদেশের করা ২৯৮ রানের লক্ষ্য ৭৪ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে টপকে যায় দিল্লি।
মাত্র ৩৩০ ইনিংস খেলেই লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ১৬ হাজার রান পূর্ণ করেন কোহলি। এতদিন এই রেকর্ডটি ছিল শচিন টেন্ডুলকারের দখলে, যিনি ৩৯১ ইনিংসে এই মাইলফলকে পৌঁছেছিলেন। টেন্ডুলকার তার লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে ৫৫১ ম্যাচে ৫৩৮ ইনিংস খেলেছেন এবং মোট রান করেছিলেন ২১ হাজার ৯৯৯। এর মধ্যে ৪৫২ ওয়ানডে ইনিংসে তার রান ছিল ১৮ হাজার ৪২৬।
কোহলি এখন পর্যন্ত ওয়ানডে ক্রিকেটে ২৯৬ ইনিংসে ১৪ হাজার ৫৫৭ রান সংগ্রহ করেছেন। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ১০ হাজার রান পার করার পর থেকে প্রতি হাজার রানের ধাপে দ্রুততম ব্যাটার হওয়ার রেকর্ডও এখন তারই দখলে। দ্রুততম ১৬ হাজার রানের তালিকার শীর্ষ পাঁচে কেবল দুই ভারতীয়— শচিন টেন্ডুলকার ও বিরাট কোহলি। তাদের পরের অবস্থানে আছেন গর্ডন গ্রিনিজ, রিকি পন্টিং, গ্রাহাম গুচ ও ভিভ রিচার্ডস।
কোহলির পাশাপাশি বিজয় হাজারে ট্রফিতে নজর কাড়েন রোহিত শর্মাও। দীর্ঘ বিরতির পর ভারতের এই শীর্ষ ঘরোয়া ৫০ ওভারের টুর্নামেন্টে ফিরেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পরিচয় দেন তিনি। জয়পুরে সিকিমের বিপক্ষে মুম্বাইয়ের হয়ে খেলতে নেমে মাত্র ৯৪ বলে করেন ১৫৫ রান। ৬২ বলেই আসে তার সেঞ্চুরি। ইনিংসে ছিল ১৮টি চার ও ৯টি ছক্কা। তার ব্যাটে ভর করেই ৮ উইকেটে জয় পায় মুম্বাই।
এই ইনিংসের মাধ্যমে বিজয় হাজারে ট্রফির ইতিহাসে দ্বিতীয় বয়স্ক ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন রোহিত। ম্যাচের দিন তার বয়স ছিল ৩৮ বছর ২৩৮ দিন। এর আগে সবচেয়ে বেশি বয়সে দুটি সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অনুষ্টুপ মজুমদার।
রোহিতের ১৫৫ রান ছিল লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার নবম ১৫০ বা তার বেশি রানের ইনিংস। এর ফলে এই ফরম্যাটে সর্বোচ্চ ১৫০ প্লাস ইনিংসের তালিকায় ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে উঠে আসেন তিনি।
ফর্মে থাকা এই দুই তারকা সাম্প্রতিক সময়েও নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে কোহলি ছিলেন সিরিজসেরা, যেখানে তিনি করেন দুটি সেঞ্চুরি ও একটি অপরাজিত হাফ-সেঞ্চুরি। অন্যদিকে রোহিত অস্ট্রেলিয়ায় সেঞ্চুরির পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ইনিংসে করেন দুটি হাফ-সেঞ্চুরি।
টেস্ট ও টি–টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেও ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুত রাখছেন কোহলি ও রোহিত। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আবারও প্রমাণ করছে, সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের সবচেয়ে বড় ভরসা এখনও এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারই।
সিএ/বিই


