এই মুহূর্তে ভারতজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে আদিত্য ধর পরিচালিত সিনেমা ‘ধুরন্ধর’। বক্স অফিসে অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে ছবিটি। মুক্তির পর থেকেই দর্শক ও সমালোচকদের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা সিনেমাটির আয় ৯০০ কোটি রুপির কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। চারদিকে যখন ‘ধুরন্ধর’-এর সাফল্যের উচ্ছ্বাস, ঠিক সেই সময়েই এক মন খারাপের খবর প্রকাশ্যে এনেছেন নির্মাতা আদিত্য ধর নিজেই।
সিনেমাটির এই সাফল্যের নেপথ্যের মানুষ আদিত্য ধর বরাবরই প্রচারের আলো থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করেন। তবে সম্প্রতি একাধিক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের ব্যক্তিগত জীবনের এক কঠিন বাস্তবতার কথা জানান। আদিত্য ধর জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ‘ডিসলেক্সিয়া’ নামের এক স্নায়বিক সমস্যায় ভুগছেন। এই সমস্যার কারণে তার জন্য একটানা চিত্রনাট্য বা লেখা পড়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। একটি পাতা পড়তেই তার প্রায় একদিন সময় লেগে যায় এবং টানা দুই বা তিন পাতা পড়া তার পক্ষে প্রায় অসম্ভব।
এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেও থেমে যাননি আদিত্য ধর। নিজের মতো করে গল্প অনুধাবন, দৃশ্য কল্পনা এবং আবেগকে বোঝার ক্ষমতাকে শক্তিতে পরিণত করেছেন তিনি। লিখিত শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে দৃশ্যভাষা ও অনুভূতির ওপর ভর করেই তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বলিউডের অন্যতম সফল নির্মাতাদের একজন হিসেবে। ‘ধুরন্ধর’-এর আগেও ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ সিনেমার মাধ্যমে বক্স অফিসে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন তিনি।
অতীতেও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে নিজের অসুস্থতার কথা প্রকাশ করেছেন আদিত্য ধর। সে সময় তিনি বলেছিলেন, “আমি আজ যেখানে আছি, সেখানে থাকার কথা ছিল না। স্রষ্টার কৃপায় এই জায়গায় এসেছি।” তার এই বক্তব্য বারবারই সামনে এসেছে জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে।
ডিসলেক্সিয়া কোনো বিরল সমস্যা নয়। শৈশবে এই সমস্যায় ভুগেছেন অভিনেতা অভিষেক বচ্চন। আমির খানের পুত্র জুনেইদ খানের পড়াশোনার ক্ষেত্রেও এমন সমস্যার কথা সামনে এসেছে। সেই তালিকায় আদিত্য ধরও নিজের নাম যুক্ত করেছেন, যিনি প্রমাণ করেছেন শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতা সাফল্যের পথে চূড়ান্ত বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
৯০০ কোটির সাফল্যের উচ্ছ্বাসের মাঝেও আদিত্য ধরের এই স্বীকারোক্তি নতুন করে মনে করিয়ে দেয়, রুপালি পর্দার সাফল্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকে ব্যক্তিগত লড়াইয়ের গল্প। ‘ধুরন্ধর’ সিনেমার নির্মাতার এই মন খারাপের খবর তাই অনেকের কাছেই হয়ে উঠেছে অনুপ্রেরণার এক বাস্তব উদাহরণ।
সিএ/বিই


