দেশের সব ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে (এনবিএফআই) ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের আওতায় আনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার (২২ ডিসেম্বর) জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে। এরই মধ্যে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত ৯টি এনবিএফআই চিহ্নিত করে সেগুলো অবসায়ন বা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং এনবিএফআই কর্তৃক পরিচালিত ব্যবসা ও কার্যক্রমে জনসাধারণের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে সব এনবিএফআইয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসহ ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ প্রযোজ্য হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংক খাতের পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও একই ধরনের নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর আওতায় আনা হলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, চিহ্নিত এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তি আমানতকারীরা তাঁদের পুরো টাকা ফেরত পাবেন। তিনি জানান, বর্তমানে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের আওতায় পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সর্বশেষ সভায় ৯টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান হলো এফএএস ফিন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি, প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফিন্যান্স, জিএসপি ফিন্যান্স, প্রাইম ফিন্যান্স, আভিভা ফিন্যান্স, পিপলস লিজিং এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৫২ শতাংশই এই ৯টি প্রতিষ্ঠানের দখলে। গত বছরের শেষে এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারী মিলিয়ে এই ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট ১৫ হাজার ৩৭০ কোটি টাকার আমানত আটকে রয়েছে। এর মধ্যে একক বা ব্যক্তি গ্রাহকের আমানত ৩ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা এবং ব্যাংক ও করপোরেট আমানতকারীদের জমা রয়েছে ১১ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা।
একক আমানতকারীদের আমানত আটকে থাকার দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে পিপলস লিজিং। প্রতিষ্ঠানটিতে আটকে আছে ১ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া আভিভা ফিন্যান্সে ৮০৯ কোটি টাকা, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে ৬৪৫ কোটি টাকা, প্রাইম ফিন্যান্সে ৩২৮ কোটি টাকা এবং এফএএস ফিন্যান্সে ১০৫ কোটি টাকা আমানত আটকে রয়েছে।
সিএ/জেএইচ


