ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই দখলকৃত পশ্চিম তীরে নতুন করে ১৯টি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির কট্টর ডানপন্থি রাজনীতিবিদ ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিবিসিকে দেওয়া এক বক্তব্যে স্মোতরিচ জানান, তিনি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজের কাছে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, যা রোববার অনুমোদন পেয়েছে। তাঁর দাবি, প্রস্তাবিত স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ রুদ্ধ করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেতানিয়াহু নেতৃত্বাধীন সরকার।
স্মোতরিচ নিজেও পশ্চিম তীরের একজন দখলদার বসতিস্থাপনকারী। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণের অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত।
এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। একই সঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের এ পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের ধারাবাহিক সম্প্রসারণ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে এবং প্রস্তাবিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে গত কয়েক দশক ধরে পশ্চিম তীরে ধাপে ধাপে বসতি স্থাপন করে আসছে ইসরায়েল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর শাসনামলে এই প্রবণতা আরও তীব্র হয়েছে। ২০২২ সালের শেষ দিকে সরকার গঠনের পর থেকে প্রায় তিন বছরে পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
সরকারি ও মানবাধিকার সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, নেতানিয়াহুর শাসনামলে পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের হার প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে ১৯টি বসতির অনুমোদন কার্যকর হলে সাম্প্রতিক তিন বছরে অনুমোদিত ইসরায়েলি বসতির সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে।
এদিকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বসতি স্থাপনের বিরোধিতাকারী ইসরায়েলি সংস্থা ‘পিস নাও’-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতির সংখ্যা প্রায় ১৬০টি। এসব বসতিতে বসবাস করছে আনুমানিক ৭ লাখ ইসরায়েলি নাগরিক।
বিবিসিকে দেওয়া বক্তব্যে স্মোতরিচ আরও বলেন, নেতানিয়াহু সরকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ধারণাকে পুরোপুরি ‘কবর দেওয়ার’ পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি
সিএ/জেএইচ


