রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে ট্রাক্টরচালক সোহেল রানা (২৮)কে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার প্রধান আসামি হাফিজুর রহমান (৫৫)কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর পল্লবী এলাকার মাটিকাটা রোডে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১৩ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) বিপ্লব কুমার গোস্বামী।
হত্যার নৃশংস পরিকল্পনা
গ্রেপ্তার হাফিজুর রহমান রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জলাইডাঙ্গা পশ্চিমপাড়ার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে।
র্যাবের তথ্যমতে, গত ২৭ অক্টোবর মোটরসাইকেল চুরির মিথ্যা সন্দেহে সোহেল রানাকে আটক করার পরিকল্পনা করেন হাফিজুর। কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে তিনি সোহেলকে জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে একটি চা-বিস্কুটের দোকানের সামনে নিয়ে যান এবং হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন।
এ পর্যন্তই নয়—হত্যার উদ্দেশ্যে দুই পায়ের হাঁটুর নিচে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। এতে সোহেল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
চাপ সৃষ্টি করে ‘মুক্তিপণ স্ট্যাম্পে’ সই নেয়া
সোহেল বাড়ি না ফেরায় পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করলে হাফিজুর ও তার সহযোগীরা গুরুতর আহত সোহেলকে বাসায় ফিরিয়ে দিয়ে পরিবারের সদস্যদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তিনটি সাদা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সই নেয়। তাদের দাবি ছিল—এগুলো ‘মুক্তিপণ ও দায়মুক্তির’ জন্য রাখা।
কিন্তু এত মারধরের পর সোহেলের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চললেও হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়।
প্রধান আসামি গ্রেপ্তার, অভিযান চলছে
ঘটনার পর সোহেলের বাবা মিঠাপুকুর থানায় মামলা করেন। মামলার পর র্যাব-১৩ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্তে কাজ শুরু করে।
রবিবার রাতে যৌথ অভিযানে পল্লবীর সিরাজ আমেনা অটোমোবাইল সলিউশন-এর সামনে থেকে হাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিপ্লব কুমার গোস্বামী বলেন—
“দীর্ঘ গোয়েন্দা নজরদারির পর প্রধান আসামি হাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তাকে মিঠাপুকুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
সিএ/এএ


