ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপদ পথ ছাড়ের নিশ্চয়তা পেলে দেশ ত্যাগে রাজি ছিলেন—এমন তথ্য জানা গেছে। গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সংক্ষিপ্ত ফোনালাপে মাদুরো একাধিক অনুরোধ জানান। তবে ট্রাম্প সেই অনুরোধগুলোর বেশির ভাগই প্রত্যাখ্যান করেন। ফোনালাপ সম্পর্কে অবগত চারটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং সামরিক তৎপরতার মধ্যে চলতি বছরের ২১ নভেম্বর দুই নেতার মধ্যে এই ফোনালাপ হয়। এর আগে গত সেপ্টেম্বর থেকে ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরে সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকায় অন্তত ২১টি হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী, যেখানে নিহত হন ৮০ জনের বেশি। ওয়াশিংটনের অভিযোগ—মাদুরো সরকারের সঙ্গে মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডের যোগসূত্র রয়েছে। তবে মাদুরো সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, ভেনেজুয়েলার বিপুল তেলসম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিতে যুক্তরাষ্ট্র ‘সরকার পরিবর্তন’ চায়।
সূত্র জানায়, ফোনালাপে মাদুরো ট্রাম্পের কাছে তাঁর ও পরিবারের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলায় ক্ষমা দাবি করেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে চলমান মামলাগুলো তুলে নেওয়ার অনুরোধও জানান তিনি।
ওই সূত্রগুলোর দাবি, মাদুরো ভেনেজুয়েলার শতাধিক সরকারি কর্মকর্তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদনও করেন। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও মাদক পাচারের অভিযোগ আছে যুক্তরাষ্ট্রের।
অন্য দুটি সূত্রের মতে, নতুন নির্বাচনের আগে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব ভাইস প্রেসিডেন্ট দেলসি রদ্রিগেজকে দেওয়ার প্রস্তাবও দেন মাদুরো।
১৫ মিনিটেরও কম সময়ের ওই কথোপকথনে ট্রাম্প মাদুরোর বেশিরভাগ অনুরোধই নাকচ করে দেন। তবে তিনি জানান, মাদুরো চাইলে পরিবারসহ ভেনেজুয়েলা ছাড়ার জন্য পছন্দমতো গন্তব্যে যেতে এক সপ্তাহ সময় পাবেন। সূত্র অনুযায়ী, সেই সময়সীমা গত শুক্রবার শেষ হয়ে গেছে।
এদিকে ক্যারিবীয় অঞ্চলে ভেনেজুয়েলার উপকূল ঘিরে বড় ধরনের সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকায় সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিক হামলা তারই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।


