দেশের ক্রিকেট পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত বিসিবির কনফারেন্সের প্রথম দিনে মাঠ সংকট ও প্রশাসনিক অনিয়ম নিয়ে তীব্র অভিযোগ করেছেন বিসিবি পরিচালক ও জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর। তার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ফুটবল অঙ্গনে বিসাল প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং সাবেক ও বর্তমান ফুটবল খেলোয়াড়রা দাবি জানিয়েছেন—আসিফ ক্ষমা না চাইলে তারা বড় ধরনের আন্দোলনে যেতে প্রস্তুত।
বিবিসি কনফারেন্সে অংশ নিয়ে আসিফ বলেছেন, জেলা পর্যায়ের ক্রিকেটাররা মাঠ না পাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে ফুটবলকে দায়ী করেন তিনি এবং দাবি করেন, ফুটবলারদের ব্যবহার ও আচরণ এমন যে তাদের কারণে ক্রিকেটের মৌলিক সুবিধা হস্তান্তর পায়নি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, কিছু ক্ষেত্রে ফুটবল খেলোয়াড়রা মাঠ দখল করে রেখেছে এবং প্রশাসনিক অনুকূলতা প্রাপ্ত হওয়ায় ক্রিকেটের জায়গা সংকুচিত হচ্ছে। তিনি বলেন, মোট কথায় ক্রিকেট কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের খেলা ও নিয়ম-কানুন মেনে চলাতে কঠোর হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
এদিন আসিফ আরও জানান যে তিনি সংঘাত-প্ররোচনার পথে যেতে চান না, কিন্তু প্রয়োজনে মাঠের অধিকার রক্ষায় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। তার মন্তব্যে ফুটবল মহলে ধরনা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যামে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক জাহিদ হাসান এমিলি অভিযুক্ত করে বলেছেন, একজন সুস্থ ও ভদ্র মানুষ এমন কটূক্তিমূলক মন্তব্য করবে না এবং এতে যোগ্য নিন্দা ও প্রতিকার প্রয়োজন। তিনি জানান যে এগুলোর বিরুদ্ধে প্রশস্ত পরিসরে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
জাতীয় দলের ডিফেন্ডার শাকিল আহাদ তপু সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছে ফুটবল ও ফুটবলারদের সম্পর্কে এমন বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য, তাই আসিফকে অবশ্যই জানানোর এবং ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন। জাতীয় দলের স্ট্রাইকার আল আমিনও লিখেছেন যে ফুটবল খেলোয়াড়রা কুশলী, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং কাউকে শিষ্টাচার শেখানোর দায়িত্ব নিতে আসার প্রয়োজন নেই; তিনি বলেন আসিফের উচিত অনুতপ্ত হওয়া। আবাহনী ক্লাবের প্রধান কোচ মারুফুল হকও সামাজিক মাধ্যমে তীব্র নিন্দা জানান এবং সরাসরি প্রতিপক্ষ বানালে তাদেরও পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় প্রস্তুত থাকার ইঙ্গিত দেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, মাঠ সংকট প্রসঙ্গটি গুরুত্বসহকারে নেয়া জরুরি—দুই খেলাঘরের চাহিদা সমন্বয় করে স্থানীয় স্তরে ভোগান্তি দূর করতে হবে। তবে ভোট ও সামাজিক প্রতিক্রিয়ার মধ্যে বিভ্রান্তি না তৈরি করার অনুরোধও করেছেন অনেকে। কনফারেন্সে অংশ নেয়া সূত্রগুলো বলছে, বিসিবি কর্মকর্তারা মাঠ ব্যবহার ও সময়নির্ধারণ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন, জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও স্কুল-কলেজগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সমাধান চাচ্ছে, কিন্তু এমন ব্যক্তিগত আক্রমণ পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে।
ফুটবল অঙ্গন থেকে আসা কড়া প্রতিক্রিয়ার পর বিষয়টি নিয়েও সংশ্লিষ্ট ক্লাব ও ফুটবল সংগঠনগুলো আগামী দিনে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা এবং ক্ষমা দাবি চলমান রয়েছে। পুলিশ বা ক্রীড়া প্রশাসন থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি প্রকাশিত হয়নি।
সিএ/এমআরএফ


