তুরস্কে চলমান শান্তি আলোচনার মধ্যেই পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে নতুন করে সীমান্ত সংঘাত ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক জেলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চারজন নারী ও একজন পুরুষ রয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আফগান সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, সংঘাত মাত্র ১০–১৫ মিনিট স্থায়ী হয় এবং পাকিস্তানি বাহিনী হালকা ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। আফগানিস্তান ও পাকিস্তান উভয়ই একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “ইস্তাম্বুলে তৃতীয় দফার শান্তি আলোচনার মধ্যেও পাকিস্তানি বাহিনী স্পিন বোলদাকে গুলি চালিয়েছে। ইসলামিক আমিরাতের বাহিনী এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।” পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে আফগানিস্তানকেই দায়ী করেছে। পাকিস্তানের তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফগান বাহিনী আগেই গুলি চালানো শুরু করে, যার জবাবে তাদের নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্বশীলভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলে সম্ভাব্য সামরিক অভিযান চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, কাবুলে তালেবানরা জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে এবং সীমান্তহারের হামলায় নীরব রয়েছে। আফগানিস্তান পাল্টা অভিযোগ করেছে, পাকিস্তান বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালাচ্ছে এবং আইএস জঙ্গিদের প্রশিক্ষণে নীরব রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান কাবুল দখলের পর থেকে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে। মূল বিবাদ টিটিপি (তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান) নিয়ে। পাকিস্তান টিটিপিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, কিন্তু আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী প্রদেশে তাদের মদত ও আশ্রয় দিয়ে আসছে।
গত কয়েক মাসে দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত সীমান্ত সংঘাত ঘটেছে। ৯ অক্টোবর পাকিস্তানের বিমান হামলায় টিটিপির শীর্ষ নেতা নিহত হন। এরপর আফগান বাহিনী পাল্টা হামলা চালায়। সংঘাত চলতে থাকায় ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত দুইপক্ষের বহু নিহত ও আহত হন। ১৫ অক্টোবর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির পরও সীমান্তে উত্তেজনা থামেনি।
সূত্র: এএফপি, আলজাজিরা
সিএ/এমআরএফ


