গণভোট ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে, আঙুল বাঁকা করবো। ঘি আমাদের লাগবেই।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি সরকারকে সতর্ক করেছেন যে, জনগণের ভোটাধিকার ও গণভোটের দাবিকে তারা এড়াতে পারবে না।
তাহের বলেন, “নো হাঙ্কি পাঙ্কি; সোজা, সোজা গণভোট দিন। চালাকি করবেন না। যদি চালাকি করা হয়, আমাদের আন্দোলনের বিস্তারও বাড়বে।” তিনি আরও সতর্ক করেছেন যে, জনগণের রায়কে ভয় পেয়ে কোনো ধরনের দমননীতি গ্রহণ করা মোটেও সমাধান নয়। “গণভোটই আজ জাতির দাবি। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু সরকার যদি তা উপেক্ষা করে, তাহলে এই আন্দোলন দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়বে।”
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাজধানীর শাপলা চত্বর থেকে মিছিল শুরু হয়ে পুরানা পল্টনের দিকে অগ্রসর হয় জামায়াতসহ আন্দোলনরত আটটি ইসলামি দলের নেতাকর্মীরা। মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত থেকে তাহের এই হুঁশিয়ারি দেন।
জামায়াতসহ এই আটটি দল প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের কাছে ৫ দফা দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবি হলো—
১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা এবং নভেম্বরে এর ওপর গণভোট আয়োজন করা।
২. আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে প্রজাতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব (প্রপারশনাল রেপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি চালু করা।
৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবার জন্য সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নিশ্চিত করা।
৪. ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।
৫. ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
অধিকাংশ ইসলামি দল এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে। আটটি দলের মধ্যে রয়েছে— জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
এই বার্তা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি শক্তিশালী সতর্কবার্তা হিসেবে ধরা হচ্ছে, যা সরকারের ওপর জনগণের ভোটাধিকার ও গণভোট বাস্তবায়নের চাপ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সিএ/এমআরএফ


