-জুবায়ের ইবনে কামাল
সিনেমা নিয়ে তো কত কথাই মানুষ বলে। তারচেয়ে বরং নটি শব্দটা নিয়ে একটা জোকস বলা যাক। এক ভদ্রলোকের নাম নটি। ইংরেজিতে বানান হয় notty। তো ঘটনাচক্রে ভদ্রলোক একদিন গিয়ে উপস্থিত হলো ইতালিতে। হাতে তার বেঙ্গলি লাঠি। তাকে রিসিভ করার জন্য এয়ারপোর্টে একজন স্মার্ট মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে দেখতে যেমন স্মার্ট কাজেও স্মার্ট। তাই সে মিস্টার নটির নাম শুদ্ধ ইংরেজিতে লিখে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে আছে। সেই প্ল্যাকার্ড দেখেই তো বাংলা থেকে আগত মিস্টার নটির রাগ চরমে। সেই স্মার্ট মেয়ে কী আর ইংরেজিতে বানান ভুল করতে পারে? তাই সে শুদ্ধ বানানে নটিকে লিখলো naughty। ফাটলো তো!
এই জোকসটা মোটেও আমার বানানো নয়। এটা জাজ মাল্টিমিডিয়ার সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘ইন্সপেক্টর নটি.কে’র একটি অংশ মাত্র। পুরো সিনেমাজুড়েই এমন ভুরি ভুরি কমেডি দিয়ে ভরপুর। কমেডি দিয়েই শুরু কমেডি দিয়েই শেষ। তবে কমেডির মাঝেই জড়িয়ে আছে গতানুগতির বাইরের প্রেম। যা পুরো সময় জুড়ে দর্শককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবে।
জিৎস ফিল্ম ওয়াকার্স ও জাজ মাল্টিমিডিয়ার যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ছবি ‘ইনস্পেক্টর নটি.কে’ পরিচালনা করেছেন অশোক পতি। প্রযোজক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জিৎ নিজেই। যৌথ।প্রযোজিত ছবি হবার কথা থাকলেও হঠাৎ করেই যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা পরিবর্তন হওয়ায় ছবিটি বিনিময় সূত্রে বাংলাদেশে আমদানি করে জাজ মাল্টিমিডিয়া। ১৯শে জানুয়ারি ভারতে মুক্তি পাওয়ার পর ২৬শে জানুয়ারি বাংলাদেশে মুক্তি পায় ‘ইনস্পেক্টর নটি.কে’।
চলুন একটু সিনেমা নিয়ে বলি। মুভিটি শুরুই হয় বাড়ির ভেতরের একটি দৃশ্যের মাধ্যমে। যেখানে ঘরের কর্তাকে বাড়বার বারণ করবার পরেও সে রান্নাঘরে গিয়ে রাঁধতে ওস্তাদ। হাবিলদার নটি বাসায় জানায় সে এখন ইন্সপেক্টর। তবে বাগড়াটা বাধে অন্য জায়গায়। সেটা নাহয় বড় পর্দায় দেখে নেয়া যাবে।
আমি ছবিটা দেখেছিলাম মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহে। প্রায় হাউজফুল লোক। মাঝবিরতিতে দুজন ভদ্রলোক বলাবলি করছেন, জানিস ভাই! অনেকদিন পর এমন হাসলাম। অন্যজন সায় দিচ্ছে। সিনেমা শেষে তরুন কয়েকজন দর্শক উচ্চস্বরে সিনেমা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। আমি অতি উৎসাহী হয়ে উঁকি মারলাম। তাদের মুল কথা ছিলো ছবিটির কমেডিটি ছিলো স্ট্যান্ডআপ। আসলেই তো! দেশে এখন কমেডি মানেই অশ্লীলতা বা এডাল্ট কন্টেন্ট। এডাল্ট টাইপ কোন কন্টেন্ট ছাড়া যেন জোকিং করা একদমই অসম্ভব। এসব কিছুকে পেছনে ফেলে একদমই গতানুগতিকতার বাইরের ছবি ‘ইনস্পেক্টর নটি.কে’।
আবার আসি সিনেমার ভেতরের কথায়। সিনেমার বেশীরভাগ দৃশ্যই ধারণ করা হয়েছে ইতালিতে। দুজন আলাদা দেশের পুলিশ অফিসার নিয়ে করা কম্বিনেশন ছিলো অসাধারণ। হিরোইনের প্রেমিক ইতালির মার্কোর গলায় আধা আধা বাংলাটাও ছবির ন্যাচারালিটি বুঝিয়েছে অন্যরকমভাবে। সিনেমা নিয়ে বর্ণনা দিতে গেলে সময় লাগবে বেশ। কী দরকার! সবাই হলে গিয়ে ছবিটি দেখলেই কাহিনী ফুরিয়ে যাবে!
ছবিটির শ্রেষ্ঠাংশে আছেন ওপার বাংলার জিৎ। তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন এপার বাংলার নুসরাত ফারিয়া। জিৎ- এর প্রযোজনায় ছবিটি পরিচালনা করেছেন অশোক পতি। ছবিটি এখনো চলছে দেশের ৮০ এর উপর সিনেমাহলে।