
বদরুল ইসলাম (বরগুনা)
গোলাপের পাঁপড়িতে ভাসে সুস্থ জীবনের সম্ভাবনা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আরোগ্যের অপূর্ব মিশেল গোলাপ। শুধু উপহার বা সাজসজ্জায় নয়, গোলাপের পাঁপড়ি এখন চায়ের কাপে এনে দিচ্ছে স্বাস্থ্যের নতুন সম্ভাবনা। গোলাপের চা আজকের হেলথ কনশাস মানুষের কাছে হয়ে উঠেছে এক অনন্য পানীয়।
কী এই গোলাপের চা?
গোলাপের চা মূলত শুকনো গোলাপের পাঁপড়ি দিয়ে তৈরি একটি ভেষজ পানীয়। এতে ক্যাফেইন নেই, ফলে এটি নেশা সৃষ্টি করে না, বরং স্বস্তিদায়ক এবং পেটের জন্য আরামদায়ক একটি চা। সাধারণত ডামাস্ক, চায়নিজ বা দেশি গোলাপ ব্যবহার করা হয় এই চায়ের জন্য।
উপকারিতা একনজরে
১. হজমে সহায়ক:
গোলাপের চা পেট ফাঁপা, গ্যাস্ট্রিক ও হজম সমস্যা দূর করে। এটি পাচনতন্ত্রে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
২. মানসিক প্রশান্তি:
গোলাপের চায়ের সুগন্ধি ও উপাদান মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি ঘুমের আগে পান করলে ভালো ঘুম হয়।
৩. ত্বকের যত্ন:
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ গোলাপের চা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
৪. পিরিয়ডজনিত ব্যথা হ্রাস:
নারীদের মাসিকের সময় ব্যথা বা অস্বস্তি কমাতে গোলাপের চা উপকারী।
৫. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:
ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ এই চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
তৈরির পদ্ধতি
উপকরণ:
শুকনো গোলাপের পাঁপড়ি ১-২ চা চামচ
গরম পানি ১ কাপ
মধু বা লেবুর রস (ঐচ্ছিক)
পদ্ধতি:
১. গরম পানিতে গোলাপের পাঁপড়ি দিন।
২. ৫-৭ মিনিট ঢেকে রাখুন।
৩. ছেঁকে মধু বা লেবু মিশিয়ে পরিবেশন করুন।
সতর্কতা
অতিরিক্ত খেলে পেট খারাপ বা অ্যালার্জি হতে পারে।
যাদের ফুল বা পরাগে অ্যালার্জি আছে, তারা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া না খাওয়াই ভালো।
গর্ভবতী বা ডায়াবেটিস রোগীরা বিশেষ সতর্কতায় খাবেন।
চায়ের কাপেই প্রকৃতির স্পর্শ
গোলাপের চা এখন শুধুমাত্র একটি পানীয় নয়, এটি স্বাস্থ্য সচেতন, প্রকৃতিপ্রেমী ও ভিন্ন স্বাদের অনুসন্ধানী মানুষের কাছে একটি ‘লাইফস্টাইল স্টেটমেন্ট’। ভেজালমুক্ত, অর্গানিক গোলাপ সংগ্রহ করে বাড়িতেও সহজেই তৈরি করা যায় এই চা।
চায়ের কাপে যদি সুগন্ধি গোলাপ ভাসে, তবে তা শুধু রুচির নয়, রুচিবোধেরও প্রকাশ। আর যখন সেই সুগন্ধ শরীর ও মনকে সুস্থ করে তোলে, তখন তা হয়ে ওঠে প্রকৃতি ও আধুনিকতার মেলবন্ধন।