ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বুধবার রাতেই মাঠে মুখোমুখি হচ্ছে পিএসজি ও রিয়াল মাদ্রিদ। তবে এই ম্যাচটিকে ঘিরে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় কিলিয়ান এমবাপ্পে। সাবেক ক্লাব পিএসজির বিপক্ষে এটিই হতে যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর তাঁর প্রথম মাঠের লড়াই।
২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাত বছর পিএসজির হয়ে খেলেছেন এমবাপ্পে। সেই সময় ক্লাবটির চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে চেয়েছিলেন এই ফরাসি তারকা। কিন্তু পিএসজিকে ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট দিতে পারেননি তিনিও। চেষ্টার ঘাটতি ছিল না, তবে ভাগ্য সহায় হয়নি কোনো পক্ষেরই।
এমবাপ্পের দলবদল নিয়ে নাটক চলেছে দীর্ঘদিন। বহুবার গুঞ্জন উঠলেও শেষমেশ ২০২৪–২৫ মৌসুমে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে চড়ান তিনি। তবে সে বিদায় ছিলো নাটকীয় ও তিক্ত। অভিযোগ, এমবাপ্পে ক্লাব ছাড়ার আগেই পিএসজির সঙ্গে আর্থিক ও নৈতিক হয়রানির বিষয় নিয়ে আদালতে যান। এমনকি ‘চাঁদাবাজির চেষ্টা’ অভিযোগও উঠেছিল ক্লাবটির বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি এমবাপ্পে অবশ্য ওই মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তবে এখনো ফরাসি শ্রম আদালতে পিএসজির কাছে প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ ইউরো বকেয়া পাওনা আদায়ের আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এই সব দ্বন্দ্ব, অভিযোগ–পাল্টা অভিযোগের ভেতর দিয়েই মাঠে ফিরছে পিএসজি–এমবাপ্পে দ্বৈরথ। আগামীকাল ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে পিএসজি ও রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে আলাদা উত্তাপ, কারণ এখানে শুধু ট্রফির লড়াই নয়—এটি একটি সম্পর্কের হিসাব মেলানোর মঞ্চও।
এমবাপ্পে ছাড়াই পিএসজি ইতিমধ্যেই বড় শিরোপা জয়ের সক্ষমতা দেখিয়েছে। এবার তাদের সামনে সুযোগ—সাবেক তারকাকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার। অন্যদিকে, এমবাপ্পের জন্যও এটি নিজের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করার শ্রেষ্ঠ মঞ্চ। পিএসজিকে ছেড়ে রিয়ালে আসাটা ভুল ছিল না, সেই বার্তাই দিতে চান তিনি।
সবকিছু মিলিয়ে ম্যাচটি যেন মাঠের ৯০ মিনিটের খেলা ছাড়িয়ে এক জটিল আবেগের দ্বন্দ্বে রূপ নিচ্ছে। শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মুখোমুখি দুই পক্ষ—যার রোমাঞ্চ ছড়িয়ে পড়ছে মাঠের বাইরেও।