–জুবায়ের ইবনে কামাল
অস্ট্রেলিয়া কি কখনো ভেবেছিলো তাদের শত বছরের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের কাছে এভাবে মুখ থুবড়ে পড়বে। কেই বা ভেবেছিলো ডেভিড ওয়ার্নারের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি আর স্টিভ স্মিথের সাথে এমন পার্টনারশিপের পরও অস্ট্রেলিয়ানরা পিছু হটতে বাধ্য হবে।
বাংলাদেশ যখন অস্ট্রেলিয়ার সাথে খেলার কথা বললো তখন পুরো ক্রিকেট বিশ্ব কৌতুক শুরু করলো। ভারতের বীরেন্দ্র শেওয়াগ তো বলেই ফেললেন, “বাংলাদেশের বড় দল গুলোর কাছে হারার খুব শখ!” কিন্তু এখানে নিশ্চুপ ছিলো বাঙালী ক্রিকেটাররা। ১১ বছর পর যখন অস্ট্রেলিয়া দলের সাথে টেস্ট ম্যাচ শুরু হলো মিরপুরে, তখন টাইগারদের চোখে ছিলো স্বপ্ন জয়ের হাতছানি।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২৬০ রানেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে অজিদের সংগ্রহ ১৮ রান। কিন্তু ততক্ষণে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন তিনজন ব্যাটসম্যান। পরেরদিনে ঘুড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। মিরাজ-সাকিবদের ঘূর্ণিঝড়ের মত স্পিন লন্ডভন্ড করে দিয়েছিলো অজিদের শিবির। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি অস্ট্রেলিয়া যখন অলআউট তখন তাদের সংগ্রহ মাত্র ২১৭ রান।
তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তামিমের ফিফটিতে দলীয়ভাবে রান হয় মাত্র ২২১। আগের লিড ছিলো ৪৩ রানের। অস্ট্রেলিয়াদের মোট টার্গেট দাঁড়ায় ২৬৫ তে।
২৬৫ রান তাড়া করতে নেমে ভালোই শুরু হয়েছিলো অজিদের। সাথে ছিলো ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের সেঞ্চুরি। জয়ের স্বপ্ন প্রায় ফিকে হয়ে গেছিলো বাংলাদেশের কাছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই ঘুড়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। সাকিবের বলে ওয়ার্নার ফেরার পর একের পর এক উইকেট পড়তে থাকে অজিদের। লাঞ্চ ব্রেকের আগে অজিদের দরকার ছিলো ৬৬ রান। আর বাংলাদেশের দরকার ৩ টি উইকেট। কিন্তু স্ট্রাইকে ছিলো বিশ্ব কাঁপানো ব্যাটসম্যান ম্যাক্সওয়েল।
ক্রিকেটে কত কিছুই না হয়! ধারনা ছিলো বিরতি শেষে সবচেয়ে ভয়ংকর হবে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট। কিন্তু ভাগ্যের কি লিলাখেলা! বিরতির পর দ্বিতীয় সেশনের প্রথম বলেই সাকিবের ওভারে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফিরে যান ম্যাক্সওয়েল। এরপর শুধুই জয়ের গল্প।
মিরপুরের এই টেস্ট জয়ের পর আনন্দে ভাসছে পুরো দেশ। পরবর্তী টেস্ট চট্টগ্রামে। সেই টেস্টও যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ ম্যাচ হবে, তা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবেনা!