মোঃ জুলকার নাইন মাহফুজ
জন্মটা ১৯৪০ সালের ২৩শে অক্টোবর ব্রাজিলের ক্রেস কোরাকোয়েসের কোনো এক বস্তিতে । দরিদ্র কৃষ্ণাঙ্গ পরিবারের প্রথম সন্তান হিসেবে পরিবারের অভাব অনটন মেটানোর জন্য ছেলেবেলাতেই পেলেকে চায়ের দোকানে কাজ করতে হয়েছিল। এছাড়া রেলস্টেশন ঝাড়ু দেওয়ার পাশাপাশি কিছুদিন জুতা পরিষ্কারের কাজও করেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন ছিল পেলের। একদিন সেই স্বপ্ন সত্যি হলো। ফুটবল খেলে বিশ্বজয় করল ছেলেটি। কিন্তু তার পেছনে রয়েছে আরও অনেক ইতিহাস।
ব্রাজিলের আর দশটা সাধারণ ছেলের মতোই গলির ফুটবল ছিল তাঁরও অবসরের সঙ্গী।কিন্তু সত্যিকারের ফুটবল কেনার টাকা ছিল না বলে মোজার ভেতরে খবরের কাগজ ঠেসে বানানো ফুটবলে চলত তাঁর অনুশীলন। ১৫ বছর বয়সে গলিতে খেলা অবস্থায় পেলেকে দেখে পুলকিত হন সান্তোসের গ্রেট ওয়ালডেমার ডি ব্রিটোর । পেলেকে ডেকে নেন সান্তোস ক্লাবের হয়ে খেলার জন্য । নিজের সহজাত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে জায়গা করে নেন সান্তোসের মূল দলে । পেলেকে এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি ।
পেলে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন ১৯৫৭ সালের ৭ জুলাই মারাকানায় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। ২-১ ব্যবধানে হারা সেই ম্যাচে ১৬ বছর ৯ মাস বয়সে ব্রাজিলের পক্ষে প্রথম গোল করে পেলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার স্থান দখল করেন।
১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে পেলের অভিষেক ঘটে। ম্যাচটি ছিল ১৯৫৮ বিশ্বকাপের তৃতীয় খেলা। ১ম রাউন্ডের খেলায় পেলে গোল করতে না পারলেও অন্তিম মুহূর্তে এসে পেলে ঠিকই জ্বলে উঠেন। কোয়ার্টার ফাইনালের ওই ম্যাচে ওয়েলসের বিপক্ষে পেলের করা গোলে ব্রাজিল সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে এবং পরবর্তীতে ব্রাজিল স্বাদ পায় প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের। এই গোলটিও ছিল বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়ের গোল। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে জোড়া গোল করে ব্রাজিলের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক বনে যান ১৭ বছর বয়সী পেলে।
এভাবে একে একে ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬ ও ১৯৭০ এর বিশ্বকাপে খেলেন পেলে। এর মধ্যে তিনবার (১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০) সালে বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব অর্জন করেন।
ক্যারিয়ারের ১৩৬৩ ম্যাচে পেলে গোল করেছেন ১২৮৩টি।ক্লাব ফুটবলে পেলের শুরু এবং শেষ স্যান্টোসে। ১৯৫৬ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৮ বছরে জিতেছেন ব্রাজিলিয়ান লীগ, কাপ আর আন্তর্জাতিক ক্লাব টুর্নামেন্টের ২৭টি ট্রফি।
ফুটবল বিশ্বের কালো মানিক খ্যাতি পাওয়া এই কিংবদন্তীর আজ জন্মদিন। ৭৮ পেরিয়ে ৭৯ বছরে পা দিলেন।
শুভ জন্মদিন মহানায়ক