আগামী ডেস্কঃ
‘সৃজনশীলতা শেখা যায়‘ এই মূলমন্ত্র নিয়ে গত শুক্রবার চট্টগ্রাম শহরের মেহেদীবাগে অবস্থিত বিস্তার আর্ট কমপ্লেক্সে দিনব্যপী অনুষ্ঠিত হল ‘পেপার অ্যান্ড পিক্সেল: সিমপ্লিফাইং ডিজাইন থিঙ্কিং‘ শীর্ষক ডিজাইন ভাবনা ও ডিজাইনের রীতিনীতি বিষয়ক ভিন্নধর্মী একটি কর্মশালা।
অনুষ্ঠানটি তরুণ ডিজাইনারদের প্ল্যাটফর্ম উই ডিজাইন ও চট্টগ্রামভিত্তিক প্রযুক্তি স্টার্টআপ চিজকেকটেক-এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হয়। অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে একজন ডেলিগেট আলা নূর বলেন- “আমি আজ পর্যন্ত অনেক ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেছি কিন্তু এতো অসাধারণ অভিজ্ঞতা এই প্রথম। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপভোগ করেছি, হাতে কলমে শিখেছি অনেক কিছু, ডিজাইন সম্পর্কে আমার নতুন একটি দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছে ওয়ার্কশপটি। দলবদ্ধভাবে একটি সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে ডিজাইন প্রক্রিয়ার ধাপগুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেয়েছি। এরকম ইভেন্ট আরো হোক, এই কামনা করছি।”
অনুষ্ঠানটির প্রধান প্রশিক্ষক ও উই ডিজাইনের ক্রিয়েটিভ হেড অনিন্দ্য আহমেদ বলেন, “একটা প্রচলিত ভুল ধারণা হচ্ছে-কিছু মানুষ সৃজনশীল আর কিছু মানুষ সৃজনশীল নয়। আমরা বলি, সব মানুষই সৃজনশীল, উপযুক্ত পরিবেশ, সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ পেলে মানুষ নিজের সুপ্ত সৃজনশীলতা জাগিয়ে তুলতে পারে। আমরা আমাদের ওয়ার্কশপের ডেলিগেটদেরকে এরকমই কিছু অনুশীলনের মাধ্যমে ডিজাইনের না না প্রসেস ও নিয়মনীতি সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছি, তাদের সৃজনশীলতার চর্চা ও বিকাশে সহায়তা করছি।”
সহ-প্রশিক্ষক ফারহান আসেফ বলেন- “সৃজনশীলতার কদর দিনকে দিন বাড়ছে। অদূর ভবিষ্যতে অনেক ব্লু কলার ও হোয়াইট কলার জবের বিলুপ্তি ঘটলেও ক্রিয়েটিভ পেশার গুরুত্ব কিন্তু কমবে না। তাই প্রচলিত ধ্যান ধারণা থেকে বের হয়ে উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার দিকে আমাদের অগ্রসর হওয়া উচিত। শুধু সফট্ওয়্যার না শিখে হাতে কলমে ডিজাইনের প্রক্রিয়া শেখা উচিত।”
উই ডিজাইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাফরিয়া হোসেন বলেন- “আমরা আমাদের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তরুণ ডিজাইনারদেরকে যুক্ত করছি। ডিজাইন মানে কোন একটা সমস্যার সমাধান করা, ডিজাইনার বলতে আমরা এমন কাউকে বুঝি যে উদ্ভাবন করতে জানে, কোন সমস্যার সমাধান করতে জানে। এই ডিজাইনারদের নিয়ে একসাথে না না কল্যাণমূলক প্রকল্পে কাজ করার ইচ্ছা আমাদের।” অনুষ্ঠানটির সহ-আয়োজক প্রতিষ্ঠান চিজকেক টেক-এর সিইও নিসর্গ নিগার বলেন- “চট্টগ্রামে আধুনিকতম প্রযুক্তি ও জীবনশৈলীর বিকাশে চিজকেকটেক ভূমিকা রাখতে চায়। তারই অংশ হিসেবে ডিজাইন ভাবনার মত সময়োপযোগী একটি বিষয় নিয়ে ওয়ার্কশপ আয়োজন করা। অংশগ্রহণকারীদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা পেয়ে আমরা অনুপ্রাণিত। তরুণদের সঠিক নির্দেশনা দিতে এরকম অনুষ্ঠান আরো আয়োজন করতে চাই।”অনুষ্ঠানটিতে সৃজনশীল পেশার গুরুত্ব ও ভবিষ্যত, আর্ট ও ডিজাইনের সম্পর্ক এবং পার্থক্য, ডিজাইন ভাবনা,মানবকেন্দ্রিক ডিজাইন, ডিজাইনের নীতি, প্রক্রিয়া- ইত্যাদি বিষয়ে হাতে-কলমে ধারণা দেওয়া হয়। ২৫ জন ডেলিগেট ও ৪ জন ফ্যাসিলিটেটরকে সনদপত্র প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির পরিসমাপ্তি ঘটে।