নাশিত আখন্দ
তারুণ্য মানেই নতুন কিছু করা, জাতিকে নতুন কিছু উপহার দেয়া, অসাধ্যকে সাধন করা। অার এই ধারণাটিকে অাবারো প্রমাণ করলেন বাংলাদেশি তিন তরুণ রায়হানা শামস ইসলাম অন্তরা, অাবদুল্লা হিল কাফি ও মাইসুল ইবনে মনোয়ার। বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ন্যানো স্যাটেলাইট “ব্রাক অন্বেষা” উৎক্ষেপন করে জাতিকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এই তিন তরুণ। স্যাটেলাইটটির নকশা তৈরী থেকে শুরু করে উপকরণ সংগ্রহ, নির্মাণ সব কাজই করেন বাংলাদেশি তিন তরুণ। ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক্স প্রকৌশল (ইইই) বিষয়ে স্নাতক করে এই তিন তরুণ এখন জাপানের কিউশু ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (কিউটেক) ন্যানো স্যাটেলাইট বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশুনা করছেন। কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ন্যানো স্যাটেলাইট প্রকল্পের মূখ্য ইনভেস্টিগেটর মো. খলিলুর রহমান বলেন, কৃত্তিম উপগ্রহ দুই ধরণের কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়- যোগাযোগ ও গবেষণা কাজের জন্য। তবে সেগুলো অনেক বড় অাকারের হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীরা যে ক্ষুদ্রাকৃতির কৃত্তিম উপগ্রহটি তৈরী করছেন, এটা উৎক্ষেপনের পর মহাকাশ থেকে বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি, নদী, ফসলের মাঠ থেকে শুরু করে নগর, পাহাড়-সাগর সবকিছুরই পর্যায়ক্রমিক অালোকচিত্রও এই উপগ্রহ থেকে পাওয়া যাবে।
প্রকৃতপক্ষে ছয়টি কাজ করতে সক্ষম এই কৃত্তিম উপগ্রহটির গ্রাউন্ড স্টেশন রাজধানীর ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয় এর ৪ নম্বর ছাদে স্থাপন করায় স্যাটেলাইটটির বার্তা একদল শিক্ষার্থী বাংলাদেশে বসেই পেতে পারে। ১০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা বিশিষ্ট এবং প্রায় ১ কেজি ওজনের এই কৃত্তিম উপগ্রহটি গত ৪জুন স্পেস এক্স ফ্যালকন ৯ রকেটটিতে করে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা- নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপন করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত স্যাটেলাইটটি অবশেষে কক্ষপথে অবস্থান করতে সক্ষম হয়েছে। সুযোগ পেলে ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু স্যাটেলাইট বানানোই নয়, সেটার তথ্য গ্রহণ করে গবেষণাও করতে পারে এমনটাই মনে করেন মো. খলিলুর রহমান। কাফি, অন্তরা, মাইসুলদের মতো মেধাবী তরুণরা এ ধরণের কাজে এগিয়ে এসে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরুবে এমনটাই জাতির প্রত্যাশা।
ছবিঃ সংগৃহিত (গুগল সার্চ)