বড় জোর ছেলেটার বয়স বারো কি তেরো। এর বেশি না। গুলিস্থানের গোলাপ শাহ মাজারের উল্টোদিকে ছোট একটা জটলা থেকে আর্তচিৎকার কানে এলো। এগিয়ে গিয়ে দেখা গেলো মাঝ বয়সী একজন লোক ছেলেটার কলার চেপে ধরেছে। লোকটার সাথে একজন মহিলাও পাশে দাঁড়িয়ে ছেলেটাকে মারার জন্য উৎসাহ দিচ্ছে। আশেপাশে উৎসুক জনগণের সবাই ছেলেটাকে মারার জন্য বলছে। পাশ থেকে একজন ফুট দোকানদার এলেন বাঁশ নিয়ে। তার আগেই লোকটি ছেলেটার গালে থাপ্পড় বসিয়েছেন দুটো। বাঁশ আনার পর বাঁশ দিয়েও বসিয়ে দেওয়া হলো আরো দুচারটি বাড়ি। ছেলেটার অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে প্রত্যাক্ষদর্শীর কেউ সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারে নি। তবে একজন জানায় ‘পকেটমার’ সন্দেহে মারা হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর লোকটির মুখ থেকেই শোনা গেলো আংশিক কিছু। তিনি বলছেন ‘লাগলে পাঁচশো টাকা খা, তবুও মোবাইল ফেরত দে’। অতি উৎসাহী একজন পথচারী পরামর্শ দিলেন রাস্তায় শুইয়ে পেটে পা দিয়ে চাপ দেওয়ার। যেই কথা সেই কাজ। রাস্তার তপ্ত পিচে শুইয়ে দিয়ে চালানো হলো অমানবিক নির্যাতন। ঠিক সেই সময় ডিউটিরত ট্রাফিকপুলিশ ছেলেটাকে উদ্ধার করে পুলিশবক্সে নিয়ে যান। আদৌ ছেলেটা দোষী কিনা জানতে না চাওয়া মানু্ষরূপী জন্তুদেরর আফসোস তখন চরমে। আরো দুচারটি কিল ঘুষি না দিতে পারার আক্ষেপ তাদেরকে জেঁকে ধরেছে।