জুবায়ের ফাহিম
লেখা পড়া করে যে
গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে
ছোট বেলা থেকে আমাদেরকে এই উক্তির মাধ্যমেই পড়ালেখার প্রতি এক আলাদা ঝোক তৈরী করা হত। পড়ালেখার মাধ্যমে আমরা যাতে নিজেরদের পায়ে দাঁড়াতে পারি। নিজেই নিজের জন্য বড় কিছু করতে পারি। তবে সেই পড়ালেখা কি আমাদের সাফ্যলের পথে না নিয়ে মৃত্যুর পথে নিয়ে যাবে? আমাদের কি আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিবে? হয়তো এখন শিক্ষাব্যবস্থা টা এমনই হয়ে উঠেছে। শিক্ষাব্যবস্থার এই নীতি সাথে আমরা যদি পাল্লা দিয়ে না উঠতে পারি তাহলে কি সব ব্যার্থতা
আমাদেরই?
হয়তো রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের ইথিকা এই জিনিষ টাই বুঝাতে চেয়েছিলেন।
ইথিকা ছিলেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের ২০১৯ এর এস.এস.সি পরীক্ষাথী । ঘটনা টি হয়েছিলো গত ২৪ তারিখ যখন তাদের জেনারেল ম্যাথ এর শিক্ষক রেজাউনুর রহমান তাদের প্রিটেস্ট এর খাতা দিচ্ছিলেন। শুধুমাত্র ১ টি মার্কের জন্য তাকে ফেল নাম্বার দেয়া হয়। ১০০ তে তাকে ৩৯ দেয়া হয়েছিলো। তবে সে বাসায় দেখানোর ভয়ে ৩৯ কে ৬৯ বানিয়ে ফেলে। তবে ইথিকা যেকোনো ভাবে তখন তার শিক্ষকের কাছে ধরা খেয়ে যায় এবং তিনি ইথিকাকে ধমক দিয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে যেতে বলেন এবং তার যেনো ট্রান্সফার সার্টিফিকেট এর ব্যবস্থা নেয়া হয় সে বিষয়ে তিনি হুমকি দেন। এতে ইথিকা বেশ ভয় পেয়ে যায়। স্যারের কথায় সে এতটাই ভয় পায় যে সে প্রিন্সিপালের কাছে যাওয়ার আগে নিজেকে শেষ করে দেয়া টাই উপযুক্ত মনে করেন।
৫ তলার সিড়ি থেকে সে লাফ দিয়ে সে কাওকে না জানিয়েই পাড়ি দেয় না ফেরার দেশে। হয়ত ইথিকা মনে করেছিলো তার ভুলের জন্য বাবা-মা কে স্কুলে ডাকিয়ে এনে তাদের ছোট করতে পারবে না। এর পর তাকে সিএমএইচ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
তবে এটি যে আত্মহত্যা এটি কোন ভাবেই রাজউক স্বীকার করতে চাচ্ছেন না। তার বদলে তারা বলেছেন ফ্লোর পিচ্ছিল থাকায় মেয়েটি স্লিপ খেয়ে পড়ে মারা গিয়েছে।
এমন কি স্কুল কমিটি স্টুডেন্টদের ও নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে যেন তারাও বলে এটা কোন আত্মহত্যা নয় বরং এটি একটি এক্সিডেন্ট।
আর কত শিক্ষাথী এইভাবে এই শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য জীবন দিবে? প্রত্যেক বছর এস.এস.সি, এইচ.এস.সি পরীক্ষার রেজাল্ট এর পরই শুনা যায় আত্মহত্যার খবর। সকল বাবা মারাই চান তাদের সন্তান যেনো জিপিএ৫ পায়। তবে সব শিক্ষাথীর অর্জন তো এক হয়ে উঠে না। অনেকে হয়তো বাবা মাকে জিপিএ৫ দিতে না পারায় এক হতাশার সাথে এই আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেয়। অনেকে মনে করেন বেশি নাম্বার টাই সব। তবে একটা শিক্ষাথী কিভাবে নাম্বার গুলো অর্জন করবে তা কেও চিন্তাও করে না। বিভিন্ন টেষ্ট,বিভিন্ন এক্সামের টাইমে বিভিন্ন স্কুল থেকে এক প্রকার হুমকি স্বরুপ মেসেজ দেয়া হয় যদি কেও খারাপ করে তখন তাকে আর প্রোমোশন দেয়া হবে না। এরকম মেসেজ হয় তো স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে কিছুই মনে হয় না কিন্তু একজন শিক্ষাথীর জন্য নোটিশ গুলো বেশ ভয়ংকর।