ইভান পাল ||
বাংলাদেশ বর্তমানে তারঁ নামের আগে একটা শব্দ বসিয়েছে, আর তা হচ্ছে “ডিজিটাল”।। পুরোটা মিলে হলো— “ডিজিটাল বাংলাদেশ”।
এর মানে হচ্ছে—- “ সারাদেশের কর্মকান্ডকে আধুনিক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সিস্টেমের আওতায় নিয়ে আসা। অর্থাৎ সমগ্র বাংলাদেশের সকল ধরনের আভ্যন্তরীণ কর্মকান্ডকে বহির্বিশ্বের যে কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা তার সাথে সমন্বয় করার মাধ্যমে সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সফলতা নিশ্চিত করা।”
তো, এরই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে খুব দ্রততার সাথেই উন্নত সব প্রযুক্তির ছোয়া লাগছে। অফিস আদালত থেকে শুরু করে প্রায় সকল ক্ষেত্রেই এই প্রযুক্তির ব্যবহার। এই তথ্য প্রযুক্তিকে মানুষের মাঝে আরো ছড়িয়ে দিতে মানব সেবাধর্মী বিভিন্ন অ্যাপস এর উদ্ভাবন ও করা হয়েছে।।
যার মধ্যে একটি হচ্ছে— এপস JOY (জয়)।
গত ২৯শে জুলাই রবিবার, বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর অডিটোরিয়ামে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক সহায়তা পেতে
উদ্ধোধন করা হয় মোবাইল অ্যাপ ~ “JOY( জয়)” এর।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি) এর একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম যৌথভাবে এই অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারটির উদ্ভাবন করেন।
অ্যাপটি উদ্ভাবনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে— নির্যাতনের শিকার বা নির্যাতনের আশংকা রয়েছে এমন নারী ও শিশুকে তাৎক্ষনিকভাবে সহায়তা প্রদান করা।
অ্যাপসটির ব্যবহারঃ
এই অ্যাপটি নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতনের সময় তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সুপার, মেট্রো এলাকার উপ-পুলিশ কমিশনার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সরকারের যে ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার রয়েছে, সে নম্বরে (১০৯) SMS চলে আসবে। তবে অবশ্যই নির্যাতিতার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এই অ্যাপটি থাকতে হবে।
এছাড়াও, সহিংসতার মুহূর্তে মোবাইলের পাওয়ার বাটন পর পর ৪(চার) বার চাপলেও ভিক্টিমের জিপিএস লোকেশন, ছবি এবং অডিও রেকর্ডিং মোবাইল মেসেজ-এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানানো যাবে। আর ভিক্টিমের নিকট থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে জয় অ্যাপস সেন্টার থেকে সরাসরিভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আর লিখিত ভাবে অভিযোগ করার ক্ষেত্রে—- অ্যাপসটির অভিযোগ করুন অপশনে গিয়ে অভিযোগের ধরণ বাছাই করে বিবরণসহ ভিকটিম তার অভিযোগটি দায়ের করতে পারবেন। এছাড়াও ‘সংযুক্ত করুন’ অপশনে যদি নির্যাতিতা বা অভিযোগকারী চায়, তবে– ছবি এবং অডিও সংযুক্ত করে প্রেরণ করা যাবে। অ্যাপস থেকে ধারণকৃত ছবি ও অডিও শুধুমাত্র বাস্তবায়নকারী সংস্থা অর্থাৎ জয় অ্যাপস সেন্টার থেকে দেখা যাবে।আর এক্ষেত্রে অবশ্যই ভিক্টিম বা অভিযোগকারীর তথ্য সম্পুর্ন গোপন রাখা হবে।
অ্যাপসটির সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ভিকটিমের তাৎক্ষণিক প্রতিকার প্রদান করা এবং অপরাধী শনাক্ত করার ক্ষেত্রে এই অ্যাপসটি একটি কার্যকরী পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হবে।।
যে কোন ধরনের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম সম্পন্ন মোবাইল ফোন থেকেই গুগল অ্যাপস্টোরে অথবা প্লে স্টোরের সার্চ অপশনে গিয়ে “JOY 109” লিখে সার্চ করে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে।।
আর সিস্টেম আপডেটের সাথে সাথে অ্যাপসটিও স্বংয়ক্রিয়ভাবে আপডেট হবে।
আর এই উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মেহের আফরোজ চুমকি। আর বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব জুয়েনা আজিজ।।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন— মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী রওশন আক্তার, পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি রৌশন আরা বেগম (পিপিএম, এনডিসি), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় (বিপিএম, পিপিএম) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মোস্তফা কামাল এবং আরো উপস্থিত ছিলেন– মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, পুলিশ সদর দপ্তর, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, এটুআই প্রোগ্রাম এবং সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ।।
আর এই পুরো অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব—- নাছিমা বেগম, এনডিসি।