আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভিসির বাসভবনে হামলা যে পরিকল্পিত তা প্রমাণিত। কারণ সেখানকার ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বিকল করে দেওয়া হয়েছে। এই বর্বরতার সঙ্গে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তদন্তে কিছুটা চিহ্নিত হয়েছে, বাকিটাও হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সেজন্য এর বিচার করতেই হবে।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির বাসভবন পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এ হামলা একাত্তরের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা হয়েছিলো। কিন্তু ভিসির বাসভবন কখনও আক্রান্ত হয়নি। এমনকি স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও এমন ঘটনার নজির নেই। ভিসির বেডরুমসহ বাথরুমের কমোড, আসবাবপত্র- সবকিছু তছনছ করা হয়েছে। পরিবারের স্বর্ণালংকার পর্যন্ত লুট করা হয়েছে।
কাদের আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কি এ কোটা চালু করেছেন? নাকি তিনি চলমান কোটায় সমর্থন করেছেন? আন্দোলনের সঙ্গে এটি কেন জড়িত করা হলো- এর জবাব দিতে হবে।
আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে মূল ভূমিকা নিয়েছিলো তাদের সঙ্গে সমঝোতাও হয়েছে। আগামী ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত থাকবে। বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যারা সত্যিকার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী, সরকারের সঙ্গে সমঝোতার পর তারা আন্দোলনে থাকবে না। যারা থাকবে বুঝতে হবে, তাদের মধ্যে বিদ্বেষ প্রসূত রাজনীতি ঢুকে পড়েছে। আর সে রাজনীতির অন্ধ আক্রোশের শিকার হয়েছে ঢাবি ভিসির বাসভবন। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এরা কি কোটা সংস্কার চায় নাকি দেশের রাজনীতি অশান্ত করতে চায়? কেউ ক্যাম্পাসকে অশান্ত করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় কিনা এটি খতিয়ে দেখতে হবে।
সরকারি চাকরির নিয়োগে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে রোববার পদযাত্রার কর্মসূচি দিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেয় ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’। বেলা আড়াইটার দিকে পাবলিক
লাইব্রেরির সামনে অবস্থায় নিয়ে প্রায় চার ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন তারা। এরপর রাতে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করে এবং রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। এর ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে বিক্ষোভ আর সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে।
মধ্যরাতের পর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ক্যাম্পাসে গিয়ে আন্দোলনকারীদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের ব্যপারে অবগত আছেন। তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সোমবার বেলা ১১টায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর রাত দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে ঢাবি ভিসির বাসভবনে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়।