ইভান পাল
বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের ত্রয়োদশ জাতীয় বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দিনব্যাপী এ কাউন্সিলে এবারে সারাদেশের সদস্যভুক্ত ২৮০টি আবৃত্তি সংগঠনের তিনজন করে প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।
আজ ২৬ অক্টোবর, শনিবার সকাল ১০টা থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় এ অধিবেশন শুরু হয়।
পরপর সপ্তমবারের মতো সংগঠনের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর। এ ছাড়া পরপর চতুর্থবারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মো. আহকাম উল্লাহ কামাল। আগামী তিন বছর তাঁরা এই দায়িত্ব পালন করবেন।
বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ ১৯৮৮ সালের ১৪ এপ্রিল অর্থাৎ পয়লা বৈশাখের দিনে যাত্রা শুরু করেছিল। সংগঠনের প্রথম সভাপতি ছিলেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সাগর লোহানী। আর এবার ১৩তম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হলো।
কাউন্সিলের শুরুতে শোক প্রস্তাব, সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন, সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা, অর্থ সম্পাদকের প্রতিবেদন, সাধারণ সম্পাদক ও অর্থ সম্পাদকের প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা, সদস্য সংগঠনের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করা হয়, গঠনতন্ত্র সংশোধনী নিয়ে আলোচনা, নতুন কমিটি গঠন ও ভবিষ্যৎ কর্মসূচির পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।
অধিবেশনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী মীর বরকত, হাসান আরিফ এবং আশরাফুল আলমসহ বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পীরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ।
কাউন্সিলে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ইস্তেকবাল হোসেন, বেলায়েত হোসেন, রূপা চক্রবর্তী, গোলাম সারোয়ার, শাহাদাত হোসেন, সোহরাব হোসেন তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, শিমুল মুস্তাফা, ইকবাল খোরশেদ জাফর, রেজীনা ওয়ালী, ফয়জুল আলম, নাজমুল হাসান (কুমিল্লা), আবু সুফিয়ান চৌধুরী (ফরিদপুর), মোকাদ্দেম বাবুল (সিলেট), আজমল হোসেন (বরিশাল), আলম আরা (খুলনা), মোহাম্মদ কামাল (রাজশাহী), কান্তি কানিজা (ময়মনসিংহ) ও সমরজিৎ দাস (চট্টগ্রাম)।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আজহারুল হক আজাদ, মীর মাসরুর জামান রনি, মাসুদুজ্জামান, কাজী মাহতাব সুমন ও রাশেদ হাসান।
সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আহসানউল্লাহ তমাল (ঢাকা), জয়দেব সাহা (ময়মনসিংহ), শাহাদাত হোসেন (ফরিদপুর), এমদাদ হোসেন কিশোর (কুমিল্লা), দেবাশীষ রুদ্র (চট্টগ্রাম), শরিফ আহমেদ (রাজশাহী), খান মাজহারুল হক লিপু (খুলনা), মারিফ বাপ্পী (বরিশাল) ও মনির হোসেন (সিলেট)।
অর্থ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, অনুষ্ঠান সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক অলোক বসু, প্রচার সম্পাদক ফয়জুল্লাহ সাঈদ, প্রকাশনা সম্পাদক জি এম মোর্শেদ, দপ্তর সম্পাদক শিরিন ইসলাম এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও গবেষণা সম্পাদক মিজানুর রহমান।
সংগঠনটির নির্বাহী সদস্যরা হলেন অনন্যা লাবণী, ফখরুল ইসলাম তারা, প্রশান্ত অধিকারী, সুবর্ণা আরফিন, মাশরুক রহমান, সিদ্দিকুর রহমান পারভেজ, আমিরুল বাশার, জিয়াউল ইসলাম, জালালউদ্দিন হীরা, আহমেদ শিপলু, সামসুজ্জামান বাবু, মাহবুবুর রহমান, অনন্যা সাহা, পুনম চিনু, তাসকিয়াতুন নূর তানিয়া, হাসান জাহাঙ্গীর, মশরুর হোসেন, সেলিম রেজা সাগর, সুকান্ত গুপ্ত, সাইমুম আঞ্জুম ইভান, রফিকুদ্দৌলা রাব্বী, শরীফ মজুমদার, আবদুল বারী, মো. জাহিদুল ইসলাম, ইমরান সাগর, মেরুনা বানু মুন, ম ম জুয়েল, আরিফ কাদরী, গোলাম মোস্তফা, এ টি এম মাকসুদুল হক, আল আমিন, সুলতান মাহমুদ শ্রাবণ, সালমানুল মেহেদী, উম্মে কুলসুম পলি, শামীমা রত্না, শামস-উল আলম, মুজাহিদুল ইসলাম প্রিন্স ও মশিউর রহমান।
এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা হলেন সৈয়দ হাসান ইমাম, আশরাফুল আলম, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, এস এম মহসীন, নিরঞ্জন অধিকারী, কাজী মদিনা, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবর্ণা মুস্তাফা, ডালিয়া আহমেদ, মীর বরকত, হাসান আরিফ, কেয়া চৌধুরী ও লায়লা আফরোজ।
সভায় অতিথিরা বলেন, দেশপ্রেম এবং নৈতিকতায় বাংলাদেশের আবৃত্তিকাররা কখনও আপস করেনি। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে মানবতা। কু-প্রবৃত্তিকে বাদ দিয়ে, আবৃত্তি এবং কথার মাধ্যমে সবাইকে সুন্দরের দিকে টেনে আনতে হবে। আমরা এখন আবৃত্তির পেছনে সময়টা ঠিকমতো দিতে পারি না, সঠিকভাবে তার ব্যবহার করতে পারিনা। সময়কে আরও সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।
অতিথিরা আরো বলেন, শিল্পীদের এক দীর্ঘ ইতিহাস আছে, সেটিকে সম্মান দিয়ে তাদের সম্মান জানানো আমাদেরই দায়িত্ব। বাংলাদেশের আবৃত্তির এখন একটি চমৎকার অবয়ব আছে। আবৃত্তি শিল্প একটি আদর্শিক জায়গা। আবৃত্তি নিয়ে অনেকেই মন্তব্য করেন বা বিতর্ক করেন যে এটা শিল্প কি না! এটা যে শিল্প, এ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। তেমনি আবৃত্তিকারকরাও আবৃত্তি শিল্পী। কেননা কবিতা নিঃশব্দে পড়ার বস্তু নয়, কণ্ঠস্বরে তার রূপ প্রকাশ পায়।
কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি আসাদুজ্জামান নূর।
ছবিঃ সংগৃহীত