উত্তরা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রব্যবস্থার মৌলিক সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
সোমবার (৩ আগস্ট) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের লেকড্রাইভ রোডে ‘শহীদ মুগ্ধ মঞ্চ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন,
“জুলাই মাস আমাদের মনে করিয়ে দেবে—এই দেশে কোনো স্বৈরাচারী বা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা টিকতে পারবে না। মীর মুগ্ধরা তা প্রতিহত করবে।”
তিনি আরও বলেন, “যেখানে ফ্যাসিবাদের শিকড় রয়ে গেছে, সেগুলো উপড়ে ফেলতে হবে। তা না হলে শহীদের সংখ্যা শুধু বাড়তেই থাকবে। আমরা চাই না আর কোনো মায়ের বুক খালি হোক কিংবা কোনো বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ উঠুক। এই দেশকে বদলাতে হলে রাষ্ট্র ও শাসনব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তন জরুরি।”
পুলিশ ও সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরে ফরিদা আখতার বলেন, “আমরা এমন পুলিশ চাই না, যারা বুকে গুলি চালায়। আর যদি রাষ্ট্র বদলাতে হয়, তবে নতুন সংবিধানের প্রয়োজন অনিবার্য। এই আলোচনায় আমাদের যেতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএনসিসি’র প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
তিনি বলেন, “মুগ্ধরা যে পাবলিক স্পেসগুলোকে প্রতিবাদের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে, তেমন আরও স্পেস ঢাকায় তৈরি করতে চাই।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাবেক সিইও ও শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা।
ডা. তাসনিম বলেন, “এক বছর পেরিয়ে গেলেও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার বাস্তবায়িত হয়নি। বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসনিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি।”
শহীদ পরিবারের দাবিতে সংবিধান সংস্কারের ডাক
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উত্তরা আন্দোলনে শহীদ নাইমা সুলতানার মা আইনুন্নাহার বেগম ও শিশু শহীদ জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন ভূঁইয়া।
আইনুন্নাহার বেগম বলেন, “গত বছর জুলাইয়ে আমাদের সন্তানরা শহীদ হয়েছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো হত্যার বিচার হয়নি। আমরা শুধু ন্যায়বিচার চাই।”
কবির হোসেন বলেন, “১৯৭২ সালের সংবিধান এখন আর চলবে না। আমরা এই সংবিধান বদলাতে চাই। যারা একাত্তরের চেতনার নামে রাজনীতি করেছে, এখন সময় এসেছে সেই চেতনার ব্যবসা বন্ধ করার।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো দাসত্ব মানব না—না দিল্লির, না আমেরিকার। আমাদের সন্তানেরা যে রক্ত দিয়েছে, তা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য। সেই লক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে যাব।