দেশের অন্যতম প্রভাবশালী দৈনিক জনকণ্ঠ-এর মালিকানা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ের বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে পত্রিকাটির বর্তমান ও সাবেক সাংবাদিক-কর্মচারীরা একটি জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তারা অভিযোগ করেন, জনকণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক শামীমা এ খান যেসব অভিযোগ তুলে ধরেছেন—তা “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া”।
মূল অভিযোগ ও সাংবাদিকদের অবস্থান
সম্প্রতি একটি অডিও রেকর্ডে জনকণ্ঠের সম্পাদক শামীমা এ খান দাবি করেন, কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মীরা পত্রিকাটি দখলে নিয়েছেন এবং তার নির্দেশনা অমান্য করে পত্রিকাটির ফেসবুক টেমপ্লেট কালো রঙে পরিবর্তন করা হয়েছে। সাংবাদিকরা জানান, এই অভিযোগ সত্য নয় এবং মালিকপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে সাংবাদিকদের হয়রানি করছে।
সংবাদ সম্মেলনের হাইলাইটস
৪ আগস্ট, ইস্কাটনে জনকণ্ঠের নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন:
ইসরাফিল ফরাজি, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও ডেপুটি চিফ রিপোর্টার
এরফানুল হক নাহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক, বিএফইউজে
খন্দকার আলমগীর হোসেন, কোষাধ্যক্ষ, ডিইউজে
আব্দুল্লাহ মজুমদার, নির্বাহী সদস্য, ডিইউজে
এবং অন্যান্য সাংবাদিক-কর্মচারীরা
ইসরাফিল ফরাজি বলেন, গ্লোব-জনকণ্ঠ শিল্প গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান জিশাল এ খানের নির্দেশে নতুন একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়, যেখানে নির্দেশনা দেওয়া হয় ফেসবুক নিউজ টেমপ্লেট কালো করতে। এর প্রতিবাদ জানালে ২০ জন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়।
৮ দফা দাবি
সাংবাদিক নেতারা পত্রিকা বন্ধের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বলেন, এখানে কর্মরত শত শত মানুষের পরিবার আছে এবং দীর্ঘ ১০–১২ মাস বেতন না পেয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন:
পত্রিকা কালো টেমপ্লেটে প্রকাশের পেছনে জড়িত মালিক পক্ষের বিচারের দাবি
চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের সম্মানজনক পুনর্বহাল
৬–৭ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ঘোষণা
১৫ কোটি টাকার বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ
চাকরিচ্যুত ৩০০ কর্মীর পাওনা পরিশোধ
অমানবিক আচরণকারীদের দায় নিতে হবে, সকল পাওনাদারদের প্রাপ্য প্রদান
সরকারিভাবে একজন প্রশাসক নিয়োগ
অফিসে হামলার ঘটনায় দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার
অতিরিক্ত তথ্য
পত্রিকার ডিজিটাল বিভাগের উপদেষ্টা ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাবরিনা বিনতে আহমদ বলেন, এই আন্দোলন শুধু জনকণ্ঠ নয়, সামগ্রিকভাবে কর্পোরেট অমানবিকতার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ। তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠান থেকেই মানবিক সাংবাদিকতার নতুন যুগ শুরু হোক।
চূড়ান্ত বার্তা
সাংবাদিক নেতারা স্পষ্টভাবে বলেন, পত্রিকা দখলের অভিযোগ নয়—তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে বকেয়া বেতন ও চাকরিচ্যুত সহকর্মীদের ন্যায্য অধিকার পুনরুদ্ধার করা।