ভারতের গুজরাট রাজ্যের ভদোদরায় মহিসাগর নদীর ওপর নির্মিত ৪৩ বছরের পুরোনো একটি সেতু আজ বুধবার (১০ জুলাই) ভোরে ধসে পড়েছে। দুর্ঘটনায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। উদ্ধার করা হয়েছে ৯ জনকে। দুর্ঘটনায় কয়েকটি যানবাহন নদীতে পড়ে যায়।
ভদোদরার পাদ্রার মুজপুর ও আনন্দ জেলার গম্ভীরাকে সংযুক্তকারী এই সেতুটি মধ্য গুজরাটকে সৌরাষ্ট্র অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করেছে। সেতু ধসে পড়ার সময় সেটিতে দুটি ট্রাক, একটি ইকো ভ্যান, একটি পিকআপ ভ্যান, একটি অটোরিকশা ও দুটি মোটরসাইকেল ছিল বলে জানায় প্রশাসন।
উদ্ধার অভিযান চলছে
ভদোদরার জেলা কালেক্টর অনিল ধামেলিয়া জানান, ইতোমধ্যে পাঁচজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এবং আরও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। নদীতে উল্টে যাওয়া ভ্যানে আটকে পড়া এক নারীকে তাঁর ছেলের জন্য কাঁদতে দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
দুর্ঘটনার পরপরই ভদোদরার ফায়ার সার্ভিস এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। এনডিআরএফের ৬ ব্যাটালিয়ন একটি ডুবুরি দল নিয়ে নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে।
সেতুর অবস্থা ও তদন্ত
কালেক্টর ধামেলিয়া আরও জানান, সেতুটি ৪৩ বছর পুরোনো হলেও গত বছর তা আংশিকভাবে মেরামত করা হয়েছিল। দুর্ঘটনার পর সড়ক ও সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। উদ্ধারকাজ শেষ হলে সেতু ধসের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করা হবে।
আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুরুতর আহতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হলেও পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও সতর্কতা
আনন্দ জেলার অঙ্কলাভ আসনের কংগ্রেস এমএলএ অমিত চাবদা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, “বিভিন্ন যানবাহন নদীতে পড়ে যাওয়ায় প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। সরকারকে অবিলম্বে উদ্ধার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে হবে এবং ট্রাফিক অন্য পথে সরিয়ে দিতে হবে।”
আনন্দ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তিনটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট পাঠানো হয়েছে এবং প্রয়োজনে আরও সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সেতু ধসের ঘটনাটি গুজরাটে পরপর অবকাঠামোগত ত্রুটির উদাহরণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব ও জবাবদিহি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।