আগামী ডেস্কঃ
পিরিয়ড! শরীরের অন্যান্য স্বাভাবিক বিষয় গুলোর মতই স্বাভাবিক একটি ঘটনা। প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কয়েক দিন মেয়েদের জরায়ু থেকে কার্ভিক্স পার হয়ে জননেন্দ্রিয় দিয়ে রক্ত নির্গত হয়। মেয়েদের শরীরের প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক এ বিষয়টাকে আমরা কতটা স্বাভাবিকভাবে নিয়ে থাকি তা নিয়ে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। কারো মতে এটা একটা অসুখ,কারো মতে ভীতির ও লজ্জার। এ সময় একজন মেয়ের মানসিক অবস্থা কেমন থাকে তা আমরা কখনোই জানার চেষ্টা করিনা। অনেকে জানিই না একটা মেয়ের কত বেশি যন্ত্রণা অনুভব করতে হয় এ সময়টাতে,তাকে কতটা অস্বস্তিতে কাটাতে হয় দিনগুলো।
আদি থেকে আধুনিক এই আজকের দিনে দাঁড়িয়েও আমরা শেষ করতে পারিনি আমাদের মধ্যে থাকা এই কুসংস্কারগুলো। তবে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে একদল তরুণ-তরুণী। দেশ ও সমাজের সুন্দর পরিবর্তনের প্রয়াসেই পথচলা শুরু তাদের ‘লাইটার ইয়ুথ ফাউন্ডেশন’ নিয়ে। গত ২৬ আগষ্ট কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী চরগুলোর ৫০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে লাইটার ইয়ুথ ফাউন্ডেশন। শুধু চিড়া,মুড়ি,গুড়,পানির বোতল,বিস্কুট,স্যালাইন,মোমবাতি,ম্যাচ আর ফিটকারিই নয়, সাথে ছিলো স্যানিটারি ন্যাপকিনও। শুধু বিতরন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকেনি কাজ।
আধুনিকতা থেকে অনেকটাই দূরে থাকা,অনেক বেশি কুসংস্কারে বিশ্বাসী চর এলাকাগুলোয় বসবাসরত মা,মেয়েদের বোঝানো হয় পিরিয়ড নিয়ে। বোঝানো হয় লজ্জাবোধ করা,লুকাতে চাওয়ার মত কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয় এটা। তাদের এ নিয়ে ভাবনাগুলো প্রকৃতপক্ষে কেমন হওয়া উচিত,সে সময়গুলোতে তাদের কী করণীয়,তাদের কীভাবে থাকা উচিত,স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের পদ্ধতি ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে বোঝানো হয়।
‘লাইটার ইয়ুথ ফাউন্ডেশন’এর মেয়ে ভলান্টিয়াররা বেশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে বিষয়গুলো তুলে ধরেন তাদের সামনে। বোঝান। ‘মিশন কুড়িগ্রাম’ নামে তাদের এই প্রয়াস শুধুই বন্যার্তদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেয়া না, ‘মিশন’ ছিলো একটি কুসংস্কারের অন্ধকার দূর করে আলো আনা। যেটা তারা করে এসেছে তাদের বিগত বছরের বন্যার্তদের সাহায্যের সময়ও ‘মিশন জামালপুর’এ। এবং সামনে তাদের কাজের ভাবনা আরো বড়। তারা ভাবেন ছোট ছোট চেষ্টাতেই একে একে সমাজের গুমোট অন্ধকার কাটবে,এভাবেই আলো আসবে।
#সম্পাদনা এমএ