মোঃ মেহেদী হাসান (১৬), গাইবান্ধা:
বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে কাঁধ ও হাতে প্রায় ৪ কেজি ওজনের একটি টিউমার নিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সাতগিরি গ্রামের জাকির হোসেনের (১২) কষ্ট করে দিন কাটাতে হচ্ছে। ধীরে ধীরে এ টিউমার থেকে সারা শরীরে মরণঘাতি ক্যান্সার রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাই জাকির হোসেনের বাবা আ. মজিদ মিয়া একমাত্র ছেলেকে বাঁচাতে দেশের চিকিৎসক ও বিত্তবান মানুষদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, ছয় ভাই বোনের মধ্যে জাকির হোসেন ৪র্থ।
বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। অন্য বোনরা অর্থের অভাবে বেশিদূর পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারেনি। আর জাকির হোসেন বাড়ীর পাশ্ববর্তী কাঠগড়া সাতগিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। বাবা আ. মজিদ মিয়া কৃষি কাজ করেন। আর মা কুলসুম বেগম গৃহিনী। তিনি অন্যের বাড়ীতে কাজ করেন।
আ. মজিদ মিয়া বলেন, ২ বছর আগে জাকিরের ডান কাঁধে একটি ছোট টিউমার দেখা দিলে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর টিউমার বড় হতে থাকলে ১৫দিন পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের এক চিকিৎসকের কাছে যাই।
তার পরামর্শে বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয় ও টিউমারের কিছু অংশ কেটে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। এরপরে সে ফলাফলে রোগের লক্ষণ ভালো নয় বলে জানান সেই চিকিৎসক। আর এই টিউমার শরীরের রক্ত চুষে খাবে ও টিউমার থেকে রক্তের মাধ্যমে ক্যান্সার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি কোন ওষুধ দেননি।
এরপর বাড়ী ফিরে স্থানীয় আরেক চিকিৎসকের কাছে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খাওয়ানো হয় জাকিরকে। এতেও ভালো না হলে একমাত্র ছেলে জাকিরকে নিয়ে গত বছরের নভেম্বর মাসে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন সহকারি অধ্যাপকের (ক্যান্সার রোগ বিশেষজ্ঞ) শরণাপন্ন হই। এই চিকিৎসক কয়েকটি পরীক্ষা-নীরিক্ষা দিলে টাকার অভাবে সেগুলো করাতে পারিনি।
পরে বাড়ী ফিরে আবারো জাকিরকে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খাওয়ানো হয়। তাতেও কোন উপকার হয়নি জাকিরের। আর এরপর থেকে উন্নত চিকিৎসা ছাড়াই দিন কাটছে জাকিরের।
আ. মজিদ মিয়া আরও বলেন, বর্তমানে জাকিরের শরীরের অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সে শুকিয়ে যাচ্ছে। তার খাওয়ায় রুচি নেই। বর্তমানে জাকির টিউমারের কারণে আর স্কুলেও যেতে পারে না। ঠিকমতো হাটতেও পারে না। তার চিকিৎসার জন্য আমি দেশের চিকিৎসক ও বিত্তবান মানুষদের সহযোগিতা চাই। কেউ কি নেই যে আমার ছেলেটার পাশে দাঁড়াতে পারে?
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য রানু মিয়া বলেন, আ. মজিদ মিয়া কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আর্থিক দুরাবস্থার কারণে জাকিরের টিউমারের চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি। দিন দিন তার টিউমারটি বড় হচ্ছে। এখনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জাকির মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবে।