ইভান পাল
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন “বোধন আবৃত্তি পরিষদ”~এর উদ্যোগে গত ২১শে ফেব্রুয়ারি যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং মহান শহীদ দিবস পালন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠনের নাম “বোধন আবৃত্তি পরিষদ”।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারণ করে সর্বস্তরের মানুষকে “আধারঁ ভেঙ্গে আলোর বুনন” ~ এ ধারণায় সম্পৃক্ত করে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াস নিয়েই চট্টগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে বোধন আবৃত্তি পরিষদ ১৯৮৭ সাল থেকে তাদের পথ চলা শুরু করে।
সংগঠনটি তাদের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এখনো অব্দি বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডগুলোকে এবং বিভিন্ন জাতীয় দিবস গুলোকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে এবং সেই সাথে চট্টগ্রাম তথা সারাদেশের মানুষকে এসকল সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে সম্পৃক্ত করবার প্রয়াস নিয়ে এগিয়ে চলেছে।।
আর তারই ধারাবাহিতায় এবছর ও বোধন আবৃত্তি পরিষদ যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং গভীর শ্রদ্ধার সাথে অান্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং মহান শহীদ দিবস পালন করেছে।
এইদিন সকাল ৭ টায় বোধন আবৃত্তি পরিষদ প্রভাতফেরির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি তে ভাষা আন্দোলনে নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে।
এরপর সকাল সাড়ে দশটায় নগরীর নন্দনকানন এলাকায় অবস্থিত আর.এফ পুলিশ প্লাজার সন্মুখ চত্বরে সংগঠনটির উদ্যোগে “একুশের চেতনা সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র না” শীর্ষক এক পথ আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । আর এতে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম এর সাধারণ সম্পাদক এস এম আব্দুল আজিজ, কবি ও গল্পকার জিন্নাহ চৌধুরী, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস বাচিক শিল্প চর্চা কেন্দ্র ‘র সভাপতি ডাঃ ভাগ্যধন বড়ুয়া, কবি শাহীন মাহমুদ একুশের কবিতা ও কথামালায় অংশ নেন।
এসময় বক্তারা বলেন, “মায়ের ভাষার জন্য বাঙালির বীর সন্তানরা সেদিন বুকের তাজা রক্ত ঢেলে রাষ্ট্রভাষার অধিকার অর্জন করেছে। যে ইতিহাস আজ বিশ্বজুড়ে অনন্য স্বীকৃতিতে আন্তর্জাতিকভাবে মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে”।
আর এ পথ আবৃত্তি আলোচনা অনুষ্ঠান টি সঞ্চালনা করেন বোধন আবৃত্তি পরিষদ ~ এর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী গৌতম চৌধুরী। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে ঢাকার চকবাজারে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ঘটে যাওয়া অগ্নিকান্ডে নিহতদের স্মরণ করা হয়।
এরপর একক ও বৃন্দ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বোধনের আবৃত্তিশিল্পীরা রক্তে গড়া বাংলা বর্ণমালা ও শহীদদের বীরত্ব কবিতার পংক্তিতে তুলে ধরেন। এসময় আবৃত্তি করেন —- রিহা চৌধুরী, অর্পিতা চৌধুরী,হিরন্ময় বড়ুয়া, বিপ্লব কুমার শীল, জসিম উদ্দিন, সাজ্জাদ হোসেন, রাসু বড়ুয়া, শংকর প্রসাদ নাথ, আয়ুশমান কর, জাহানারা বেগম, জলিল উল্লাহ, মিজবাহ উদ্দিন খান,বিজয় চৌধুরী, শুভ্রময় বড়ুয়া, পুষ্পিতা বিশ্বাস, আদিত্য দে, সুপ্তি দাশ, গোলামুন্নবী ইরফান, মলি দে প্রমুখ।
আর এরপরে নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয় মাঠে দৈনিক প্রথম আলো আয়োজিত বর্ণমেলা অনুষ্ঠানে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম এর স্থায়ী পরিষদ সমন্বয়ক আবৃত্তিশিল্পী সোহেল আনোয়ারের গ্রন্থণায় ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী সঞ্জয় পালের নির্দেশনায় বোধনের বড়দের বিভাগের আবৃত্তিশিল্পীরা “আমি কি ভুলিতে পারি” প্রযোজনায় অংশ নেন।